শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিরোধ মেটাতে নেতাদের ঢাকায় তলব

আজ রংপুর ও কাল চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক আওয়ামী লীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিরোধ মেটাতে রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের আওয়ামী লীগ নেতাদের ঢাকায় তলব করা হয়েছে। আজ (শনিবার) রংপুর বিভাগের সঙ্গে এবং আগামীকাল (রবিবার) চট্টগ্রাম বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করবেন দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারা। ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জানিয়েছেন, বৈঠকে কোন্দল নিরসন করা, সংগঠনকে চাঙা করতে যেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে সেখানে সম্মেলন, কর্মিসভা করাসহ নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হবে।

জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ে কোন্দল বাড়ছে। প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিরোধ নানা শাখা-উপশাখায় পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ কোথাও ভাই লীগ, এমপি লীগ, ভাবি লীগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। নির্বাচনের পর হানিমুন মুডে থাকা আওয়ামী লীগের কোন্দল মাথা চারা দিয়ে ওঠায় এখন টনক নড়ছে। সে কারণে কোন্দল মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বিরোধপূর্ণ জেলা নেতাদের ঢাকায় তলব করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আজ রংপুর বিভাগের নেতাদের ডাকা হবে এবং আগামীকাল চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাদের ঢাকায় তলব করা হয়েছে। বৈঠক থেকে বিভাগীয় নেতাদের ঐক্যের বার্তা দেওয়া হবে। চট্টগ্রাম বিভাগে অনেক স্থানে জেলা-উপজেলায় চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেউ কাউকে মানতে চাচ্ছেন না। ফলে অনেকটাই ভেঙে পড়েছে চেইন অব কমান্ড।

রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘নির্বাচনের পর অনেক স্থানে দলের অভ্যন্তরে অনেক ছোটখাটো সমস্যা দেখা দিয়েছে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থেকে কোথাও কোথায়ও প্রতিহিংসাও দেখা যাচ্ছে। সে কারণে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় রংপুর বিভাগের সব নেতাকে ঢাকায় ডাকা হয়েছে। আমরা তাদের কথা শুনব, কার সঙ্গে কার কোন্দল সেগুলো সমাধানে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্দেশনা দেবেন।’ চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দলের তৃণমূলে গতিসঞ্চার, দলীয় শৃঙ্খলা ও ঐক্য সুসংহত করার জন্য বিভাগীয় নেতাদের ডাকা হয়েছে। বৈঠকে কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গকরণ, সম্মেলন করাসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগের সব কেন্দ্রীয় নেতা, বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের নেতারা, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদান করা হবে।’

জানা গেছে, প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন হবে আগামী ৮ মে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। এ নির্বাচন ঘিরে অনেক জায়গায় বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এবার নৌকা প্রতীক না দেওয়ায় আরও সংকট তৈরি হয়েছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। ফলে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা নড়বড়ে। তাছাড়াও সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র কৌশলের কারণে দলের ভিতরে যে বিভক্তি হয়েছিল, তা এখনো নিরসন হয়নি। কোথাও কোথাও বিরোধ স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। ক্ষমতার আধিপত্য, সাংগঠনিক কার্যক্রমের গতি ফিরিয়ে আনাসহ দ্রুত সংকট সমাধানের জন্য আওয়ামী লীগ এখন নড়েচড়ে বসছে। এ জন্য জেলা নেতাদের ঢাকায় ডেকে সংকট সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে। ঈদের পর কেন্দ্রীয় নেতাদের পূর্ব গঠিত টিমগুলো জেলা সফরে বের হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর