শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

মানুষকে পুলিশে না দিয়ে কেন হত্যা করছে?

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

মানুষকে পুলিশে না দিয়ে কেন হত্যা করছে?

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মানুষ হত্যা নিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে আবারও সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শুক্রবার রাজ্যটির আলিপুরদুয়ার জেলার তুফানগঞ্জে নির্বাচনি প্রচার সভায় বক্তৃতাকালে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিদিন বিজেপি ঝামেলা করছে, বিএসএফ গুলি চালাচ্ছে। আর গুলি চালানোর পরই তারা বলছে ওই ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে এসেছিল, সেজন্য গুলি ছুড়েছি। কিন্তু গুলি ছুড়তে কে বলেছে? আপনারা কেন ওই ব্যক্তিকে পুলিশে তুলে দেননি? পুলিশ আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি দেখে। পুলিশ তদন্ত করে দেখ তো কী হয়েছে? কিন্তু বিএসএফকে গুলি চালানোর অনুমতি কে দিয়েছে?’ মমতা ব্যানার্জি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে বলেন, ‘আমরা সেনাবাহিনীর স্কুলকে খুব সম্মান করি। কিন্তু সেই স্কুলকেও বিজেপির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে! তারা কী শিখবে? ওরা ইতিহাস বদলে দিয়েছে, ওরা আম্বেদকরকে মানে না!’ বিএসএফকে নিয়ে মমতার অভিযোগ এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় বিএসএফের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। গ্রামে ঢুকে গ্রামবাসীর ওপর বিএসএফের অত্যাচারের অভিযোগও তুলেছিলেন মমতা। এর আগে মার্চে কলকাতার ধর্মতলায় এক সমাবেশে বক্তৃতার সময় সীমান্তহত্যা নিয়ে বিএসএফের তীব্র সমালোচনা করেন মমতা ব্যানার্জি। বিএসএফের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ইসকনের এক পুরোহিতকে অত্যাচার করে মেরে খেলার অভিযোগও তুলেছিলেন তৃণমূলপ্রধান। লোকসভা নির্বাচনে ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় ১০২ আসনে ভোট নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি-এ তিনটি লোকসভা আসন। মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘সামনে আমাদের পয়লা বৈশাখ, তার আগে ঈদ রয়েছে, রেড রোডে ওদের ঈদের নামাজে আমি অংশ নিই। তা ছাড়া সামনেই ১৬ এপ্রিল অন্নপূর্ণা পুজো, ১৭ এপ্রিল রামনবমী আছে। তাই ভোটের আগে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টায় ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট রাখা হয়েছে।’ বিজেপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দাঙ্গা করে ভোট করার চেষ্টা করলে একজনকেও রেয়াত করা হবে না।’ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গোটা বিশ্ব ভারতের এ নির্বাচনের দিকে নজর রাখছে। তাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যাতে নির্বাচন হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ভারতের গণতন্ত্রকে আপনি ছুরি দিয়ে হত্যা করবেন না। যদি জেতার ব্যাপারে আপনি আত্মবিশ্বাসী হন, তবে সবাইকে ভোট করতে দিন। কেন গায়ের জোরে, ষড়যন্ত্র বা অত্যাচার করে নির্বাচন হবে?’ এদিনের নির্বাচনি প্রচারের অনুষ্ঠান থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ইস্যুতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেই তারা বেনাগরিক হয়ে যাবে, তাদের দেশছাড়া হতে হবে। ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে আপনাদের বলা হবে বাংলাদেশ থেকে আপনার বাবা-মায়ের ৫০ বছর আগেকার জন্মের সনদ নিয়ে আসুন। কিন্তু আপনারা কি সেই সনদ আনতে পারবেন?’ যদিও তিনি যতদিন রাজ্যে আছেন ততদিন কাউকে রাজ্য থেকে বিতাড়িত হতে হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মমতা।

সর্বশেষ খবর