রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
আসাদুজ্জামান খান

নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে না

বান্দরবান প্রতিনিধি

নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে না

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, কেউ সন্ত্রাস করে জনজীবনকে অস্থির করে তুলবে, আর আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে, এটা হতে পারে না। তিনি বলেন, আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাব। কোনোক্রমেই কাউকে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে কারও কোনো গাফিলতি আছে কি না, তাও সরকার খতিয়ে দেখবে। গতকাল সকালে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সোনালী ব্যাংক, রুমা উপজেলা মসজিদ ও আনসার ব্যারেক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। সাঁড়াশি অভিযান নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দেশের নিরাপত্তাবাহিনী তাদের মতো করে অভিযান চালাবে। আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করার আমরা তাই করব। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘কেএনএফ’-এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীনসহ বিভিন্ন দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি বান্দরবান সার্কিট হাউসে জেলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক রুদ্ধধার বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অপরাধীদের নির্মূল করতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে সব বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ কম্বিং অপারেশন চালানো হবে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন সেনাবাহিনীর প্রধান। রবিবার (আজ) তিনি বান্দরবান সফরে আসছেন। এখান থেকেই ফিরে গিয়ে তিনি বিশেষ কম্বিং অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই সেনাপ্রধানকে এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান। বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের ওই শাখা পরিদর্শনে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, শনিবার (আজ) থেকে ব্যাংকে ডাকাতি, অস্ত্র লুটের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়া এ ঘটনা ঘটার আগাম তথ্য দেওয়ার বিষয়ে গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, অস্ত্র, পোশাকসহ তারা ঢুকবে, আর আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে, তা কাম্য নয়। এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাব। কোনোক্রমেই আইন ভঙ্গ করতে দেব না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে হামলাকারীরা কেএনএফের সদস্য। পার্শ্ববর্তী দেশের সন্ত্রাসীদের থেকে তাদের হাতে অস্ত্র এসেছে। এসব সন্ত্রাসীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।

তিনি বলেন, শান্তিপ্রিয় মানুষগুলো এই এলাকায় থাকে। এখানে এ রকম কোনো ঘটনা হবে, আমরা চিন্তা করিনি। হঠাৎ করে কেন ঘটল, তদন্ত করা হচ্ছে। অর্থ সংগ্রহের জন্য এই হামলা হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত সরকার মনে করছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, কারা করেছে, কাদের সহযোগিতা ছিল, সবকিছু বের করা হবে। আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখছি। পরপর তিন দিন কয়েকটি হামলা, ব্যাংক ডাকাতি, অপহরণ, গোলাগুলি ও অস্ত্র লুটের ঘটনার পর বান্দরবানে সশস্ত্র গোষ্ঠী কেএনএফের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান শুরুর ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে। তারা তাদের মতো করে কাজ করবে। আমরা এদের উৎপত্তিস্থল খুঁজে বের করব। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আনসার সদস্যদের খোঁজ নেন। এরপর পার্শ্ববর্তী মসজিদের ইমাম ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে সোনালী ব্যাংক রুমা শাখা পরিদর্শন করেন। এই শাখার ভল্ট ভেঙে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লুট করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

সর্বশেষ খবর