সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদ্রোহীদের হাতে মিয়ানমারের আরেক শহরের পতন

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

তিন বছর আগে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সামরিক শাসকরা সে দেশের বিদ্রোহীদের কাছে আরও একটি শহর হারিয়েছে। এবার তাদের দখল থেকে থাইল্যান্ড সীমান্তের সঙ্গে লাগোয়া গুরুত্বপূর্ণ মায়াওয়ারি শহর বিদ্রোহীদের কাছে হাতছাড়া হয়েছে। সেখানে মিয়ানমার বাহিনীর কয়েক শ সৈন্য কারেন বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে অন্য বিদ্রোহী বাহিনীগুলোর সঙ্গে মিলে এই শহরে হামলা চালিয়ে আসছিল কারেন বিদ্রোহীরা। গত শুক্রবার কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ঘোষণা করে, মায়াওয়ারি শহরের ১০ কিলোমিটার দূরে থানগানিয়াং শহরে অবস্থিত মিয়ানমার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা আত্মসমর্পণ করেছে। কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন একটি ভিডিও প্রকাশ করে দেখিয়েছে, তাদের তরুণ যোদ্ধারা বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র কব্জায় রেখেছে। এগুলো জান্তা সৈন্যদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে। সূত্র বলেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক পরাজয়ের এটি সর্বশেষ উদাহরণ। গত কয়েক মাসে চীন সীমান্ত সংলগ্ন শান রাজ্যের এলাকা এবং বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের বিপুল এলাকা বিদ্রোহীদের কাছে হারিয়েছে সামরিক জান্তা। হাজার হাজার সৈন্য এর মধ্যেই হয় নিহত হয়েছে অথবা আত্মসমর্পণ করেছে অথবা পালিয়ে গেছে। এর ফলে সে দেশের বাসিন্দাদের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার।

জানা গেছে, কারেন ন্যাশনালিস্ট ডিফেন্স ফোর্স এবং কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির মতো অন্য বিদ্রোহী বাহিনীগুলোর সঙ্গে মিলে যৌথ হামলা শুরু করেছে কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন। থাই সীমান্ত সংলগ্ন প্রচারক ও জুয়াড়ি চক্রের অর্থায়নে শক্তিশালী মিলিশিয়া বাহিনী এতদিন ধরে সামরিক বাহিনীকে সমর্থন করে এলেও এ বছরের শুরুর দিকে পক্ষবদল করেছে। এরপর থেকে বিদ্রোহীদের পাল্লা অনেক ভারী হয়ে উঠেছে। দেশের বহু এলাকায় যুদ্ধে বিপর্যস্ত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কারেন রাজ্যে নতুন করে সৈন্য পাঠাতে পারছে না। এর ফলে তাদের সীমান্তের সঙ্গে প্রধান সড়কের নিয়ন্ত্রণ হারাতে হয়েছে। এদিকে  মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের দক্ষিণে চারমাইল এবং উত্তরের নাকফুরা এলাকায়  জান্তা (সরকারি) বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মি (এএ) সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। সীমান্তের এপারের টেকনাফে তুমুল বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে। গতকাল দিনভর থেমে থেমে ৪০টির বেশি মর্টারশেলের বিস্ফোরিত হয় বলে সীমান্তের বাসিন্দারা জানিয়েছেন। বিস্ফোরণের শব্দ নাফ নদীর এপারে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১২টি গ্রাম, হ্নীলা, সাবরাং এলাকায় গ্রেনেড ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শোনা গেছে।  টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়ে কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার থেকে আবারও গোলাগুলি সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফনদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর