মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
উপজেলায় বাড়ছে ভোটের উত্তাপ

প্রার্থীসহ তিনজনকে অপহরণ নাটোরে, মারধর করে ফেরত

নাটোর প্রতিনিধি

প্রার্থীসহ তিনজনকে অপহরণ নাটোরে, মারধর করে ফেরত

নাটোরে অপহৃত সিংড়া উপজেলা নির্বাচনের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশা, তাঁর ভাইসহ তিনজনকে বাসার সামনে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। তবে দুর্বৃত্তদের বেদম মারধরে সম্ভাব্য প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশার অবস্থা আশঙ্কাজনক। গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশি পাহারায় নাটোর সদর হাসপাতালে আনা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। নাটোর পুলিশ সুপার কার্যালয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে অপহৃত দেলোয়ারকে গতকাল বিকাল সোয়া ৫টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁর নিজ বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম সেখানে ছুটে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাঁকে পুলিশি পাহারায় নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোছা. রওশনারা বেগম জানান, দেলোয়ারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোগীর মাথায় আঘাত রয়েছে। বাইরে থেকে রক্তপাত না হলেও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। তাঁর মুখ দিয়ে লালা ঝরছে এবং তিনি অচেতন অবস্থায় আছেন। তাঁর অবস্থা জটিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দেলোয়ারের সঙ্গে থাকা তাঁর সহোদর এমদাদুল হক জানান, বেলা পৌনে ১১টার দিকে তাঁকে ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন মুন্সিকে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা সবাই সম্ভাব্য প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের কর্মী-সমর্থক। তারা তাদের একটা কালো হাইস মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে থাকে। এ সময় তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। তবে তাঁর ভাই দেলোয়ার হোসেনকে একই স্থান থেকে অপহরণ করার পর দুর্বৃত্তরা বেদম মারধর করেছে। তাঁর অবস্থা ভালো নয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইচ্ছা প্রকাশ করায় তাঁদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। লুৎফুল হাবীব রুবেল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক ও শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সম্ভাব্য প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমি অনেক আগে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি। কিছুক্ষণ আগে পত্রিকা পড়ে ঘটনা জানলাম। ঘটনার সময় যাদের দেখা গেছে তারা আপনার সহযোগী, আপনার নির্দেশে তারা অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কাউকে অপহরণ করতে বলিনি। নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, সকালের ঘটনাটি তিনি জানতেন না। বিকালের ঘটনার পর সম্ভাব্য প্রার্থী দেলোয়ারকে উদ্ধারের জন্য ব্যাপক অভিযান শুরু করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে দুর্বৃত্তরা তাঁকে তাঁর বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায়। তিনি অসুস্থ। তাঁকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করা হবে। তবে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা জানান, তিনি নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। তিনি পুলিশ সুপারকে বিভিন্ন স্থানে চৌকি বসিয়ে ওই মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীকে উদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তদন্ত করে এ ঘটনায় সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর