নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার ও বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরও অন্তত ১০ জন আহত হন। গতকাল সকালে রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল নিলক্ষা ইউনিয়নের বীরগাঁও সোনাকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত সাগর ভূঁইয়া (২০) সোনাকান্দি গ্রামের আমিরাবাদ এলাকার জয়নাল ভূঁইয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ও স্থানীয় আনোয়ার গ্রুপের সমর্থক। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, এলাকার আধিপত্য বিস্তারসহ নানা কারণে নিলক্ষা গ্রামের রাজিব সরকার ও পিচ্চি হান্নানের সঙ্গে একই এলাকার আনোয়ার সরকার ও তৌকির সমর্থকদের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। দ্বন্দের জেরে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাছাড়া ছিলেন রাজিব ও তার সমর্থকরা। সম্প্রতি নিলক্ষার গোপিনাথপুরে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি শুরু করেন আনোয়ার সরকার সমর্থক ও নিলক্ষা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তৌকির। এদিকে বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালায় রাজিব সমর্থক হান্নান। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ আরও চাঙ্গা হয়। সর্বশেষ গতকাল সকালে রাজিব সমর্থকরা লোকজন নিয়ে দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলাকা দখলের জন্য বীরগাঁও, সোনাকান্দি, আমিরাবাদসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। এ সময়  বীরগাঁও এলাকার আনোয়ার গ্রুপের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। দুইপক্ষের গোলাগুলিতে সাগর ও হান্নান নামে দুজন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হন। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে। পরে গুলিবিদ্ধ সাগর মিয়াকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ ও নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান জানান, গুলিবিদ্ধ সাগরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার ডান কানের ওপরে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নরসিংদীর সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল-আলম জানান, সোনাকান্দি এবং আমিরাবাদ গ্রামের পূর্ববিরোধসহ বালু ব্যববসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহতের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।