শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

প্রতিমন্ত্রী পলক সিংড়ার ঘটনার জন্য ‘লজ্জিত দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইকে অপহরণ করে মারধরের ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ‘লজ্জিত, দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী’। তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিচার হবে। কেউ ছাড় পাবে না।’ প্রতিমন্ত্রী গতকাল সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন দেলোয়ার ও তার দুই ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ডাক্তারদের নির্দেশ দেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় তিনি জানান, তিনি বিদেশে ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ১টায় দেশে ফিরেছেন। তবে বিদেশে থেকেও ঘটনার সব সময় খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি ভাবতেও পারেননি নাটোরের মাটিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি লজ্জিত, দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনার খোঁজখবর রাখছেন। কেউ ছাড়া পাবে না।’ ওই ঘটনায় দেলোয়ার হোসেনের ভাই অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে একজন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও নির্বাচনের প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের পক্ষ হয়ে তারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘লুৎফুল হাবীব আমার আত্মীয় তা অস্বীকার করব না। তবে আত্মীয়তার সুবাদে বা রাজনৈতিক কারণে সে বা অন্য কেউ বাড়তি সুবিধা পাবেন না। বরং এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যা এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। গত সোমবার পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে নাটোর জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইসহ দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে অপহরণ করে মারধর করে দুর্বৃত্তরা। পরে মুমূর্ষু দেলোয়ারকে তার গ্রামের বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সহযোগীরা ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। লুৎফুল হাবীব রুবেল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক। সোমবার সকালে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য দেলোয়ার হোসেন নাটোর স্টেশন এলাকার একটি কম্পিউটারের দোকানে আসেন। এ সময় তার বড় ভাই ও কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক এবং কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুন্সি ব্যাংকে জামানতের টাকা জমা দেওয়ার জন্য বের হন। তারা কোড নম্বর জানার জন্য নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে এলে কালো মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন যুবক তাদের পথরোধ করেন। এক পর্যায়ে তাদের জোর করে ওই মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বিকালে নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে কয়েকজন যুবক প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ করে এবং মারধর করে মুমূর্ষু অবস্থায় তার গ্রামের বাড়ির সামনে ফেলে যায়। ওই ঘটনায় মামলা করেন দেলোয়ারের ভাই মজিবুর রহমান। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। নাটোর প্রতিনিধি জানান, ‘অসদাচরণের অভিযোগে কেন আপনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না’ মর্মে কারণ দর্শানোর জন্য লুৎফুল হাবীব রুবেলকে ৩ দিন সময় দিয়ে চিঠি দিয়েছে। এতে স্বাক্ষর দেন উপজেলা আওয়ামী লীগ। শুক্রবার সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ওহিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস।

সর্বশেষ খবর