শিরোনাম
রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিএনপিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ

♦ মহাসচিবসহ অনেক পদে পরিবর্তন ♦ চলতি বছরে কাউন্সিল

শফিউল আলম দোলন

বিএনপিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ

আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চায় ঝিমিয়ে পড়া বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলীয় কৌশলে পরিবর্তন আনা হতে পারে। পাশাপাশি সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। চলতি বছরেই আয়োজন করা হবে কেন্দ্রীয় জাতীয় কাউন্সিলের। দলীয় মহাসচিবসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন হতে পারে।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় কাউন্সিলের আয়োজন করা হতে পারে। স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকে দলের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে দলের শীর্ষ পর্যায়ে অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা চলছে। জিয়া পরিবারের স্বজনদের মধ্য থেকেই কাউকে নতুন মহাসচিব বানানো হতে পারে বলে দলে আলোচনা আছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের জেলা, মহানগর ও উপজেলাসহ প্রতিটি ইউনিটকে ঢেলে সাজানো হবে। দলের সর্বস্তরের কমিটি হবে সম্মেলনের মাধ্যমে। পুনর্গঠন করা হবে প্রতিটি মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি। বাণিজ্য ঠেকাতে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলে গণতন্ত্রচর্চা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দলকে শক্তিশালী করাই এ সম্মেলনের মূল লক্ষ্য। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটি পুনর্গঠনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটিগুলোও গঠন করা হবে পর্যায়ক্রমে।

এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কমিটি গঠন ও পুনর্গঠন চলমান প্রক্রিয়া। বিএনপি এর বাইরে নয়। দলের জাতীয় সম্মেলন তথা কাউন্সিলও যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। বিগত আন্দোলনে যারা দক্ষতা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন, কমিটি পুনর্গঠনের মাধ্যমে তাদের মূল্যায়ন করা হবে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর অনেকটাই হতাশায় ছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। হতাশা কাটিয়ে চাঙাভাব আনাসহ দলকে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড় করাতেই এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন চলমান সরকার পতন আন্দোলনে কাক্সিক্ষত ফল না আসায় দলটির অভ্যন্তরে কৌশলগত পরিবর্তনের বিষয়েও আলোচনা চলছে। বিগত দেড় দশকে দলে নেতাদের ‘পারফরমেন্স’ মূল্যায়নপূর্বক কমিটি গঠন, পুনর্গঠনসহ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের দিকেই দৃষ্টি এখন বিএনপির। কূটনৈতিক তৎপরতায়ও ভিন্নতা আনা হতে পারে। চীন-জাপানসহ পূর্বমুখী কূটনীতি জোরদারের পাশাপাশি ইউরোপ-আমেরিকার সঙ্গেও সম্পর্ক নিবিড় করতে চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটিকেও ঢেলে সাজানো হবে। দক্ষিণ এশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ভৌগোলিক সীমানা অনুযায়ী পৃথক ‘ডেস্ক’ গঠনের কথাও ভাবছেন দলটির হাইকমান্ড।

দলীয় সূত্র জানায়, নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি। দলকে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা, নিজেদের দাবির পক্ষে দেশে-বিদেশে জনমত তৈরি এবং সংগঠনকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে নানাভাবে কাজ করছেন নেতারা। একই সঙ্গে আন্দোলনও চালিয়ে যেতে চায় দলটি। তবে আপাতত জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে বিএনপি। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দল পুনর্গঠন ও কাউন্সিলের বিষয়ে বেশি নজর দিচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ১ মার্চ বিএনপির অন্যতম সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। বাকি অঙ্গসহযোগী সংগঠনও পুনর্গঠন করতে চান তারা। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচন হয়ে গেল মানেই আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাবে না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ যে প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা দখল করে আছে, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। সাংগঠনিক কার্যক্রমের বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জাতীয় কাউন্সিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে। আর মহানগর, জেলা, উপজেলাসহ অন্য ইউনিটগুলোর কমিটি গঠন, পুনর্গঠন কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেটি চলছে এবং চলবে।

সর্বশেষ খবর