সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে জনসচেতনতা জরুরি

--- ড. মাহফুজা পারভীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে জনসচেতনতা জরুরি

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) কার্যনির্বাহী বোর্ডের সদস্য ও ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. মাহফুজা পারভীন বলেছেন, প্লাস্টিক দূষণ পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনছে। এটা ক্রমান্বয়ে বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।  রোগব্যাধি বাড়ছে। মাটি বন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। মাছসহ বিভিন্ন জলজপ্রাণী মারা যাচ্ছে। নদ-নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। দূষণ প্রতিরোধে সরকারের কার্যকর উদ্যোগের পাশাপাশি জনসচেতনতাও জরুরি। নিজের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের পরিবেশ আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারের পলিথিন ও প্লাস্টিক বোতল যেখানে-সেখানে ফেলছি। এগুলো বিভিন্ন জলাশয়ে যাচ্ছে। একসময়ে এগুলো গুঁড়া হয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হচ্ছে। মাছ এগুলো খেয়ে মারা যাচ্ছে। মাছের প্রজনন কমছে। যেসব মাছ বেঁচে থাকছে তাদের শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক থেকে যাচ্ছে। গবেষণায় বাংলাদেশের বিভিন্ন নদী ও জলাশয়ের মাছের দেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এটা বিপদের কথা। এই মাছ আমরা খাচ্ছি। মাটিতে মিশছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। সেই মাটিতে জন্মানো শাকসবজি আমরা খাচ্ছি। যার ফলে পরোক্ষভাবে আমাদের শরীরে প্লাস্টিকের নানা ক্ষতিকর পদার্থ প্রবেশ করছে। খাদ্যচক্রের মাধ্যমে আমাদের শরীরে জায়গা করে নিচ্ছে প্লাস্টিক। এর ফলে আমাদের শরীরে ক্যান্সার সেল বাসা বাঁধছে। বর্তমানে মানুষের রোগবালাই অনেক বেড়ে গেছে, যেটা আমাদের পূর্বপুরুষদের সময়ে ছিল না। ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনি রোগসহ নানা রোগ বাড়ছে। এর পেছনে দূষণ অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, আমি যখন জাপানে ছিলাম তখন বোতলের মুখ, বোতল ও লেবেল তিন জায়গায় আলাদাভাবে ফেলতাম। এতে রিসাইক্লিংয়ে সুবিধা হতো। এটা না করলে জরিমানায় পড়তে হতো। আমাদেরও সব প্লাস্টিক আলাদাভাবে সংগ্রহ করে রিসাইকেলের ব্যবস্থা করতে হবে। পৃথকভাবে বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। এরপরও কেউ দূষণ ঘটালে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। তবে শুধু সরকারের একার পক্ষে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো সম্ভব নয়। জনগণকেও সচেতন হতে হবে। প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন, চিপসের প্যাকেট যত্রতত্র না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে, যেখান থেকে সংগ্রহ করে তা রিসাইকেল করা সম্ভব হয়। আবার এই বর্জ্য আলাদাভাবে সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।

সর্বশেষ খবর