মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভোটেই থাকলেন বেশির ভাগ বিএনপি নেতা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

৮ মে অনুষ্ঠেয় প্রথম ধাপের ১৫০ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বিএনপির বেশির ভাগ প্রার্থীই দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে ভোটের মাঠে আছেন। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন। গতকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ৪৫ জনের মধ্যে মাত্র কয়েকজন প্রত্যাহার করেছেন। এদিকে গতকাল ভোটে থাকায় বিএনপির দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি দলীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। যারা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে ভোট করছেন তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে দলের পক্ষ থেকে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির কেন্দ্র ও তৃণমূলের মধ্যে চলছে তোলপাড়। বাড়ছে দ্বন্দ্ব এবং দূরত্ব। বর্তমানে যেসব নেতা-কর্মী নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন তাদের নির্বাচন থেকে ফেরানো নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। তারা মনে করছেন, প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রার্থীদের ফেরানো না গেলে পরের ধাপগুলোতে প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে, আর তাতে দলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। যারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে নির্বাচন করবেন তাদের বিরুদ্ধে দল কঠোর ব্যবস্থা নেবে। অনেকে বলছেন আগে পদে ছিলেন, এখন নেই, তাই নির্বাচন করতে দলীয় বাধা নেই। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আগে দলীয় পদে ছিলেন, এখন তাদের পদ না থাকলেও বিএনপির সদস্য পদ তো আছে। সুতরাং তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। জানা গেছে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে দুই নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এরা হলেন পটুয়াখালী সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির রহমান এবং কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর তাজ। দলটির বহিষ্কার আদেশের ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনের মাঠে আছেন অন্তত ৪০ নেতা-কর্মী। নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অমান্য করেই মাঠে থাকছেন তারা। এরা নির্বাচনে অংশ নিতে অনড়। তারা বলছেন, দলীয় পদ না থাকায় তাদের নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো বাধা নেই। জানা গেছে, দলীয় নির্দেশনা সত্ত্বেও ভোটে থাকতে চান সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন মাস্টার, ফরিদপুর সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রউফ উন নবী ও যুবদলের সাবেক নেতা কে এম নাজমুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা বিএনপির সভাপতি নগেন্দ্র চন্দ্র সরকার, রাজশাহীর গোদাগাড়ী জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান খান, শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আমিনুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজমুল আলম, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রমিজ উদ্দিন, নাঙ্গলকোট উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের সাবেক বিএনপি নেতা আশরাফ হোসেন ও ভোলাহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাবর আলী বিশ্বাস, জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, পিরোজপুর ইন্দুরকানি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফায়জুল কবির তালুকদার, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেবুল মিয়া, যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা সফিক উদ্দিন, ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শামসুর রশিদ, ফুলপুর পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমরান হাসান ও হালুয়াঘাটে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল হামিদ। জানা যায়, দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মাস্টার, একই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর তপু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিএনপির একাংশের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইয়াজদানী আলীম আলরাজী (জর্জ) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে যুগ্ম আহ্বায়ক মোসা. শাহনাজ খাতুন, চেয়ারম্যান পদে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

সর্বশেষ খবর