বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
৫৫ উপজেলায় ভোট ৫ জুন

সকালে যাবে ব্যালট সরকারদলীয় একাধিক প্রার্থী নিয়ে শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। এই ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট ৫ জুন হবে। নির্বাচন কমিশনের ৩২তম সভা শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ঢাকার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিকাল সাড়ে ৩টায় সভাটি হয়। সভা শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আর দ্বিতীয় ধাপের ১৬০ উপজেলার ভোট গ্রহণ হবে ২১ মে। আর তৃতীয় ধাপের ১১২টি উপজেলার নির্বাচন ২৯ মে হবে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান রেখে নতুন বিধিমালা করেছে ইসি।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে : গতকাল সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে ষষ্ঠ উপজেলা ভোট নিয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় চার নির্বাচন কমিশন, জননিরাপত্তা বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টার এই বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এবার উপজেলা নির্বাচনে অন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চেয়ে বেশি সংখ্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হবে। চার ধাপে ভোট হওয়ায় জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের চাহিদা অনুযায়ী সদস্য মোতায়েন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী’ এবারের উপজেলা ভোটে সহিংসতার কোনো আশঙ্কা করা হচ্ছে না। তারা বলেছে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। অনেক দল অংশ নিচ্ছে দলীয় প্রতীক ছাড়া। সেক্ষেত্রে একই দলের একাধিক প্রার্থী যেমন রয়েছে, যারা নির্বাচন বর্জন করেছে তাদেরও কিছু অনুসারীরা ভোটে অংশ নিচ্ছে বলে তথ্য রয়েছে।

ইসি সচিব বলেন, ‘উপজেলাভিত্তিক বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে বাড়িয়ে দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন আশা করে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, হাকিমসহ যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে ঘিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন এবং যথাযথভাবে নির্বাচনের ফলাফল পাবেন। আইনগতভাবে যে কোনো নাগরিক ভোটে অংশ নিতে পারে মন্তব্য করে সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাদের জনপ্রতিনিধিদের স্বজনদের অনেককে বারণ করেছেন। এটা আইন নয়, দলীয় সিদ্ধান্ত। একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে ইসির সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাত্ম করার সুযোগ নেই। আমরা চাই, অধিক সংখ্যক প্রার্থী আসবে। যত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আসবে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন তত সুষ্ঠু হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সমন্বিতভাবে ইসি সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।

জাহাংগীর আলম বলেন, উপজেলাভিত্তিক বিজিবি মোতায়েন করা হবে। উপজেলা ভেদে দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। জনবলের সংখ্যা উপজেলাভিত্তিক বাড়িয়ে দেওয়া হবে। বড় দল আসবে না, এর প্রভাব ভোটে থাকবে কি-না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলীয় প্রতীক ছাড়া অনেক দল অংশ নিয়েছে তাই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। একই দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, যেসব দল নির্বাচন বর্জন করেছে তাদেরও কিছু কিছু অনুসারীরা এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাই কমিশন আশা করে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম নেওয়া হবে যাতে নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তার পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে সুষ্ঠুভাবে বাড়ি যেতে পারেন, যাতে নির্বাচনে তাদের মতামত প্রতিফলিত হয়। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, সকালে ব্যালট পাঠানোর বিষয়ে আলোচনায় হয়েছে বৈঠকে। সভায় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক প্রার্থী অংশ নেওয়ার তথ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া অনেক উপজেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। অনেক উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতা, কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে কোন্দলও রয়েছে। সেই বিষয়ে শতর্ক থাকার পরামর্শ এসেছে সভায়। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর