বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
ভারতে দ্বিতীয় দফার ভোট

২৫০ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতে প্রথম দফার লোকসভার নির্বাচন শেষ। দ্বিতীয় দফায় ভোট গ্রহণ ২৬ এপ্রিল। ভোট নেওয়া হবে ১৩টি রাজ্য এবং কেন্দ্র্র শাসিত অঞ্চলের ৮৯টি লোকসভা কেন্দ্রে।

এ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে কেরল ২০, কর্ণাটক ১৪, রাজস্থান ১৩, মহারাষ্ট্র ৮, উত্তর প্রদেশ ৮, মধ্যপ্রদেশ ৭, আসাম ৫, বিহার ৫, ছত্রিশগড় ৩, পশ্চিমবঙ্গ ৩, মণিপুর ১, ত্রিপুরা ১, জম্মু ও কাশ্মীরে ১টি আসন। পশ্চিমবঙ্গের যে ৩ আসনে ভোট নেওয়া হবে সেগুলো হলো- দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাট আসন। বর্তমানে তিনটি আসনই বিজেপির দখলে। বালুরঘাটে বিজেপির প্রার্থী বর্তমান সাংসদ ও রাজ্যের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এ কেন্দ্রে তার প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের ক্রেতা ও সুরক্ষা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। দার্জিলিংয়ে বিজেপির প্রার্থী বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তা, তার প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূলের গোপাল লামা এ কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে মুনিশ তামাং। অন্যদিকে রায়গঞ্জের বিজেপি বর্তমান সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকে এবার প্রার্থী করেনি বিজেপি, বদলে প্রার্থী করা হয়েছে কার্তিক পালকে। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের কৃষ্ণ কল্যাণী এবং কংগ্রেসের আলী ইমরান রামজ (ভিক্টর)। এ দফায় দেশজুড়ে হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী। তিনি লড়বেন কেরলের ওয়ানাড কেন্দ্রে। এ কেন্দ্রে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআই প্রার্থী অ্যানি রাজা, বিজেপির কে. সুরেন্দ্রন। এ ছাড়া লোকসভার বিদায়ী স্পিকার ওম বিড়লা (কোটা), কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত (যোধপুর), রাজস্থানের বিজেপি রাজ্য সভাপতি সিপি জোশি (চিতোরগড়)। সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, জাতিসংঘের কূটনীতিবিদ ও কংগ্রেস নেতা শশী থারুর (তিরুবন্তপুরম), এ কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। এ ছাড়াও মথুরা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপির প্রার্থী অভিনেত্রী হেমা মালিনী, মিরাট কেন্দ্র থেকে লড়ছেন অভিনেতা অরুণ গোভিল, ত্রিশুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন মালায়ালাম অভিনেতা সুরেশ গোপী, আলাপ্পুঝা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল প্রমুখ। এ দফায় মোট ১ হাজার ২১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ১৯২ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা অভিযোগের তথ্য সামনে এনেছে দেশটির ভোট নজরদারি সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস’ (এডিআর)। তাতে দেখা গেছে ১ হাজার ১৯২ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৫০ জনের (২১ শতাংশ) বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা রয়েছে। যার মধ্যে আবার ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর অপরাধের মামলা। তিনজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, ২৪ জনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ, ২৫ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নারীদের ওপর অপরাধ সংঘটিত করার মামলা রয়েছে, একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের মামলা রয়েছে, ২১ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রাখার অভিযোগ। এডিআর আরও জানিয়েছে দ্বিতীয় দফায় গোটা দেশে ছড়িয়ে থাকা ৮৮টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৫২ শতাংশ কেন্দ্রই লাল সতর্কতা যুক্ত। এর অর্থ ওই কেন্দ্রগুলোতে তিন বা তার বেশি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। যে ২৫০ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে তাদের মধ্যে প্রধান রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের ৩৫ জন প্রার্থী, বিজেপির ৩১ জন প্রার্থী, সিপিআইর পাঁচজন, সমাজবাদী পার্টির চারজন, শিবসেনার দুজন, শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী) দুজন, জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)-এর দুজন প্রার্থী রয়েছেন। এডিআরের বিশ্লেষণকৃত তথ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের সম্পদের পরিমাণও সামনে এসেছে। জমাকৃত হলফনামায় দেখা গেছে এ দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাওয়া প্রার্থীদের ৩৩ শতাংশ প্রার্থীই কোটিপতি। সেক্ষেত্রে প্রার্থীদের গড় সম্পদের পরিমাণ ৫.১৭ কোটি রুপি। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কংগ্রেসের ৬৮ জন প্রার্থীর গড় সম্পদের পরিমাণ ৩৯.৭০ কোটি রুপি। বিজেপির ৬৯ জন প্রার্থীর গড় সম্পদের পরিমাণ ২৪.৬৮ কোটি রুপি। সমাজবাদী পার্টির চার প্রার্থীর গড় সম্পদের পরিমাণ ১৭.৩৪ কোটি রুপি। শিবসেনা উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর চার প্রার্থীর গড় সম্পদের পরিমাণ ১২.৮১ কোটি রুপি। তৃণমূল কংগ্রেসের চার প্রার্থীর গড় সম্পদের পরিমাণ ৪.১৬ কোটি রুপি, জেডিইউর পাঁচজনের গড় সম্পদের পরিমাণ ৩.৩১ কোটি, সিপিআইএমের ১৮ জনের গড় সম্পদের পরিমাণ ২.২৯ কোটি। যদিও হলফনামায় ছয়জন প্রার্থী জানিয়েছেন তাদের সম্পদের পরিমাণ শূন্য। উল্লেখ্য, মোট সাত দফায় লোকসভার নির্বাচন নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে তৃতীয় দফায় ৭ মে, চতুর্থ দফায় ১৩ মে, পঞ্চম দফায় ২০ মে, ষষ্ঠ দফায় ২৬ মে এবং সপ্তম শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা আগামী ৪ জুন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর