বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
সরেজমিন

হাসপাতালে গিজগিজ করছে ডায়রিয়া রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে দূষিত খাবার ও পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ- আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে গিজগিজ করছে ডায়রিয়া রোগী। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫০০-এর বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে এখানে। রোগীর মধ্যে বেশির ভাগই বয়স্ক ও শিশু। গত সোমবার রাজধানীর মহাখালীর আইসিডিডিআরবিতে দেখা যায়- রাত ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ২৫৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। আগের দিন রবিবার ৫২২ জন ভর্তি হয়েছে। আর গত শনিবার ভর্তি হয়েছে ৫৪৩ জন। অর্থাৎ প্রতিদিনই ৫০০-এর বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। আইসিডিডিআরবি সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ সময়ে এ হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি থাকে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০। তবে বর্তমানে হাসপাতালটিতে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। গত সোমবার থেকে এক সপ্তাহে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ৩ হাজার ১২৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে গত সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ২৫৫ জন রোগী। আইসিডিডিআরবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গরমে এখন বেশির ভাগ বৃদ্ধ রোগী ভর্তি হচ্ছে। ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ৬০ শতাংশ বৃদ্ধ। আর ৪০ শতাংশ শিশু। হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গরমের সঙ্গে বেড়েছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এ হাসপাতালে গাজীপুর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা শিশু রায়হানের মা বলেন, ১০ দিন আগে যখন ডায়রিয়া দেখা দেয়, তখন থেকেই তার জ্বর এবং প্রচণ্ড বমি। তবে মাঝখানে জ্বর ছাড়ে, আবার আসে। এরকম কয়েকদিন হয়েছে। প্রথমে ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে খাওয়ানো হয়েছে। এরপর স্থানীয় বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসক দেখিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি। সব শেষে যখন দেখছি ছেলের অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না, দিন দিন খারাপ হচ্ছে, তখনই আত্মীয়স্বজনদের পরামর্শে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখানে এসে গতকালের তুলনায় আজকে অবস্থা কিছুটা ভালো। ডাক্তার বলেছেন, কয়েকদিন এখানে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে। গরমে শিশুদের ডায়রিয়া বাড়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী। অনেক সময় দেখা যায় খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। এ ছাড়া দূষিত পানি পান করার ফলে এ ধরনের ডায়রিয়া হয়ে থাকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. ইফফাত আরা শামসাদ বলেন, গরমে সাধারণ ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে। আমাদের দেশে গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায় মার্চ-এপ্রিলে ডায়রিয়া রোগী বাড়ে। আবার অক্টোবর-নভেম্বরে রোগীর সংখ্যা বাড়ে। এটা একটা মৌসুমি প্রকোপ। অনেক সময় দেখা যায় অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে ডায়রিয়া হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যারা সরাসরি মাতৃদুগ্ধ খায় তারা তুলনামূলক কম আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর ফিডার দিয়ে খাওয়ানের ফলে শিশুরা বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।

 

সর্বশেষ খবর