গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে দম্পতির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও।’ গতকাল সকালে উপজেলার মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার এক কক্ষের একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত মো. ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী থানার হলদী গ্রামের মো. মফিজুল হকের ছেলে ও মোছাঃ রোকেয়া খাতুন (১৫) ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত ৭/৮ মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। তারা দুজনই শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থেকে ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন। নিহত রোকেয়ার ভাই মো. বোরহান উদ্দিন জানান, ৭-৮ মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ে সম্পর্কে জড়িয়েছিল। তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছিল। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে ভাড়া বাসায় আনা হয়েছিল। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই। নিহত ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্ল্যাটে করতেন। শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভিতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার লাশ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান। পরে পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও, আমি তোমাদের সঙ্গে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারও কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতাছে। সবাই ভালো থাকবা আমি। মো. ইসরাফিল। মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁসি দিল। তার জন্য সম্পূর্ণ আমি দায়ী। এতে কারও কোনো দোষ নাই।’ শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, খবর পেয়ে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রী আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেন। লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।