রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

উপজেলা নির্বাচনে সংঘাত শুরু

♦ মেহেরপুরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৩ ♦ মাদারীপুরে হাতবোমা বিস্ফোরণ, মারপিটে আহত ১০

প্রতিদিন ডেস্ক

উপজেলা নির্বাচনে সংঘাত শুরু

৮ মে প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এ নির্বাচন কেন্দ্র করে প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হয়ে গেছে। গতকাল পাওয়া খবর অনুযায়ী, মেহেরপুরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরোধে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হলে ১৩ জন আহত হন। মাদারীপুরের কালকিনিতেও সংঘর্ষ এবং এ সময় হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। মারপিটে অন্তত ১০ জন আহতও হয়েছেন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

মেহেরপুর : মেহেরপুরে মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণাকে কেন্দ্র করে মহাজনপুর গ্রামে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাম হোসেন মিলু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতার সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ইসলাম শেখের (৬০) অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে রেফার্ড করা হয়েছে। আহতরা হলেন- তোতা গ্রুপের রাজন আলী (২৬), শাহজাহান আলী (২৫), আবদুুস সাত্তার (৫৫), আনারুল ইসলাম (৫০) এবং মিলু গ্রুপের রাসেল শেখ (২৩), শাহেদ আলী (২৫), শাহাবুদ্দীন (৫০), উজ্জ্বল (৩২), রমজান আলী (২১), মেহেরাব হোসেন (২২), সৌরভ মেম্বার (৪৭), হাবিবুর রহমান (২২)।

রফিকুল ইসলাম তোতা বলেন, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমাম হোসেন মিলুর কিছু সমর্থক মহাজনপুর বাজারে আমার একটি অফিসে হামলা চালায়। এ সময় অফিস ভাঙচুর করে। তারপর উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আমাদের পাঁচ কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ইসলাম শেখের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বাকিদের মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে আমাম হোসেন মিলু বলেন, আমাদের সমর্থকরা একটি অফিস উদ্বোধনের জন্য রফিকুল ইসলাম তোতার অফিসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় তার সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় আমাদের আট কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছে। তাদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার দত্ত বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী আমাম হোসেন মিলু ও রফিকুল ইসলাম তোতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন।

মাদারীপুর : মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজ ও সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় হাতবোমা বিস্ফোরণে উভয় পক্ষের আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কানাইপুরে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দক্ষিণ কানাইপুরের মৃত মালেক সরদারের ছেলে দুবাইপ্রবাসী রিপন সরদার বাড়িতে আসেন। এ খবর পেয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ একই এলাকার আনসার হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হাওলাদার লোকজন নিয়ে রিপনের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালান। পরে সমাধানের জন্য স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। এ ঘটনায় ২৩ এপ্রিল ভুক্তভোগী রিপন সরদারের স্ত্রী রুনিয়া বেগম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ২২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রিপনের চাচাতো ভাই ও আলীনগর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজের সমর্থক জামাল সরদার স্থানীয় বাজারে যান। মাঝপথে জামালকে একা পেয়ে সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের কর্মী মহসিন রাঢ়ী লোকজন নিয়ে কুপিয়ে জখম করেন।

পরে উভয় পক্ষের লোকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় একাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বোমায় আহত হন অন্তত ১০ জন। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রিপন হাওলাদারের আগের ঘটনার মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর