রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
ভারতে লোকসভা নির্বাচন

বিজেপি-ইন্ডিয়ার পাল্টাপাল্টি প্রচার

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বিজেপি-ইন্ডিয়ার পাল্টাপাল্টি প্রচার

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ১৩টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৮৮টি সংসদীয় নির্বাচনি এলাকার জন্য ভোট নেওয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপে গড়ে ভোট পড়েছে প্রায় ৬৩.৫০ শতাংশ। যদিও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটের হার আরও কিছুটা বাড়তে পারে। মোট সাত দফায় লোকসভার ভোট হবে। তৃতীয় দফায় ভোট নেওয়া হবে আগামী ৭ মে, চতুর্থ দফায় ১৩ মে, পঞ্চম দফায় ২০ মে, ষষ্ঠ দফায় ২৬ মে এবং সপ্তম শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা আগামী ৪ জুন। পরবর্তী ধাপগুলোর জন্য নির্বাচনি প্রচারণায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। গতকাল গোয়া, মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে নির্বাচনি প্রচারণায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে বরপেটায় ছিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। মহারাষ্ট্রের লাটুরে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদরা। এই নির্বাচনে দেশটির প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের জোট বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এবং বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’র দিকে নজর রাজনৈতিক মহলের। বিজেপি ছাড়াও এনডিএ জোটে রয়েছে পিএমকে, জেডিইউ, আরএলডির মতো কিছু রাজনৈতিক দল। ইন্ডিয়া জোটে রয়েছে কংগ্রেস, আপ, আরজেডি, সমাজবাদী পার্টি, তৃণমূল, এনসিপির মতো কয়েকটি রাজনৈতিক দল। চলমান নির্বাচনে ৪০০ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে এনডিও জোট। অন্যদিকে ইন্ডিয়া জোটের লক্ষ্য দিল্লির ক্ষমতা থেকে বিজেপিকে সরানো। স্বাভাবিকভাবে জোটের নেতারা তাদের রণকৌশল স্থির করে নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। কোলাপুরের জনসভা থেকে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনেও এনডিএ জোটের ফল ভালো হবে বলে প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোলাপুর মহারাষ্ট্রের ফুটবল হাব হিসেবে পরিচিত। এখানকার তরুণদের মধ্যে ফুটবল বেশ জনপ্রিয়। ফুটবলের ভাষা অনুযায়ী, গতকালের দ্বিতীয় পর্বের শেষে বিজেপি এবং এনডিএ ২-০ তে এগিয়ে রয়েছে। বিরোধী কংগ্রেসকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোট সামাজিক ন্যায়কে হত্যা করেছে। কংগ্রেস এবং তার বন্ধুরা বুঝতে পেরেছিল যে তারা এনডিএর উন্নয়নের ট্র্যাক রেকর্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে পারবে না, তখন তারা তাদের কৌশল পরিবর্তন করে। তারা দেশবিরোধী এজেন্ডা ও তোষণনীতি ব্যবহার করছে। এখন, কংগ্রেসের এজেন্ডা হলো তারা কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা পুনর্বহাল করবে।’ অন্যদিকে আসামের বরপেটায় একটি নির্বাচনি প্রচারণায় উপস্থিত থেকে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বিজেপিকে নিশানা করে বলেছেন, ‘এই লোকেরা (বিজেপি) বিজ্ঞাপন দেয় যে, প্রধানমন্ত্রী মোদিই একমাত্র যিনি গরিবদের সাহায্য করার জন্য জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অথচ একটা সময় যে দেশে চাল-গম পর্যাপ্ত পরিমাণে উৎপাদিত হতো না এবং আমেরিকা থেকে আমদানি করতে হতো, সেখানে আজ আমরা সেই পরিমাণ গম, চাল ও ডাল উৎপাদন করছি যা দেশের মানুষের খাবারের জন্য যথেষ্ট। এটা সবই কংগ্রেস, সাবেক প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহর লাল নেহেরু এবং ইন্দিরা গান্ধীর কারণে হয়েছে, যারা দেশে সবুজ বিপ্লব এবং শ্বেত বিপ্লব এনেছিলেন। যে দেশে একটি সুচও তৈরি হতো না, সেখানে কেউ যদি রকেট ছোড়ার সাহস করে, তা হলো পণ্ডিত জওহর লাল নেহেরু এবং ইন্দিরা গান্ধী।’ মোদিকে নিশানা করে খাড়গে এও বলেন, ‘আজ তারা রেল, সড়ক, বন্দর, বিমানবন্দর সবকিছু বিক্রি করে দিচ্ছে। মোদি আর অমিত শাহ হচ্ছেন বিক্রেতা, অন্যদিকে ক্রেতারা হলেন আদানি এবং আম্বানি। তারা কখনোই দেশের উন্নয়নের পক্ষে নয়, আসলে প্রধানমন্ত্রী মোদি দেশের অর্থ লুট করছেন, গরিবদের পয়সা লুট করে তিনি ধনীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।’

সর্বশেষ খবর