রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
জি এম কাদের

জাপাকে গৃহপালিত দল হিসেবে দেখতে চায় সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাপাকে গৃহপালিত দল হিসেবে দেখতে চায় সরকার

জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টিকে গৃহপালিত দল হিসেবে দেখতে চায় সরকার। আমরা গৃহপালিত বিরোধী দল হব না। যে কজন থাকে তাদের নিয়েই আমরা দেশ ও জাতির জন্য কাজ করব।

গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে অনুগত বিরোধী দল বানাতে চেয়েছিল। নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে না থাকলেও আমার ওপর দায়িত্ব দেওয়ায় আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেটা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, দল বাঁচাতেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। আওয়ামী লীগ এখন স্বৈরতন্ত্র কায়েম করার চেষ্টা করছে। জি এম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচন জীবনমরণের সংগ্রাম মনে হয়েছে। তিনটি শক্তি নির্বাচনকে সফল করার জন্য চেষ্টা করেছে। অনেকের নিজস্ব স্বার্থ জড়িত ছিল। তিনি বলেন, আমরা না গেলেও নির্বাচন হতো। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার জন্য আওয়ামী লীগ লালায়িত ছিল না। তারা আমাদের গলায় কিছু পচা আবর্জনা ঢুকিয়ে অনুগত বিরোধী দল বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি গৃহপালিত বিরোধী দল হতে রাজি না। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, নির্বাচনে ২৬টি আসনে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি জনগণের মধ্যে যেমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে, নেতা-কর্মীদের মাঝেও করেছে। আমাদের হাতে ২৬টি আসনের তালিকা ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ তালিকা দিয়ে বোঝানো হলো, জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, নির্বাচনে যাব না বলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ দেওয়া হয়। সবাই ভাবে ২০০ কোটি টাকা নিয়ে কাদের দল বিক্রি করে দিয়েছে। তারপর শুধু টাকা দেন, টাকা দেন করেছে। মনোনয়ন নিয়ে কোনো বাণিজ্য হয়নি, কোনো মনোনয়ন আমি নিজের ইচ্ছায় দিইনি।

রাজনীতি থেকে এরশাদ এবং তার পরিবারকে নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল অভিযোগ করে কাদের বলেন, সবাই বলে আমি আমার স্ত্রীর জন্য দল বেচে দিয়েছি, এটা সঠিক নয়। উত্তরার আসনটা নিতে চেয়েছিলাম দলের ভালোর জন্য। তিনি বলেন, আমাকে ধ্বংস করা মানে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করা, সেটি করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিএনপি আন্দোলনে সফল না হয়ে নিজেদের দোষ তার ওপর চাপিয়েছে মন্তব্য করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, আমার ধারণা ছিল বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। কারণ, আন্দোলন দিয়ে সরকার পরিবর্তন করা যায় না। ১ কোটি লোক আন্দোলন করলেও সরকার পরিবর্তন হবে না। নির্বাচনের মাধ্যমেই শুধু সরকার পরিবর্তন সম্ভব। সভায় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রশাসনের ভূমিকা ও অর্থের অভাবে আমাদের অনেক জনপ্রিয় নেতা নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি। নির্বাচনের পর অনেক সহকর্মী ভুল বুঝে দূরে সরে গেছেন, ভালো থাকলে দুঃখ নেই। কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, পল্লীবন্ধু এরশাদের জাতীয় পার্টি জি এম কাদেরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সালমা ইসলাম, মো. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর