মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

ইউপিতেও সহিংসতা হতাহত, গ্রেফতার

প্রতিদিন ডেস্ক

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। মামলায় সহস্রাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে পুলিশ নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাইন ভুলুসহ দুজনকে আটক করেছে। এদিকে দিনাজপুরের বিরলে নির্বাচনি সহিংসহায় নিহত হাজি মোহাম্মদ আলীর লাশ গতকাল ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশি নিরাপত্তায় বাড়িতে পৌঁছানো হয়। পরে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য-

লক্ষ্মীপুর : সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জে ভোটের ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল সকালে সদর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ের চেয়ারম্যান ওমর হুছাইন ভুলুকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। অন্য আরেকটি মামলায় অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, রবিবার সন্ধ্যায় তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আঁধার মানিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটের ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আক্তার হোসেন বোরহান চৌধুরীর লোকজন পুলিশ ও আনসার সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় রামগতি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলমের গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ রাউন্ড রাবার বুলেট, চার রাউন্ড গ্যাস শেল এবং দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেট নিক্ষেপ করে। একই সময় ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শহর কসবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স নিয়ে আসার সময় একপক্ষ পুলিশকে বাধা দেয়। এ নিয়ে সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাইন ভুলুসহ দুজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় ভুলুকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০-৫০০ জনকে বিবাদী করে মামলা করা হয়।

দিনাজপুর : জেলার বিরলের আজিমপুর ইউনিয়নে সিঙ্গুল হামিদা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে দুই ইউপি সদস্য সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত দুই প্রার্থীর সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়। এতে পুলিশ সদস্যরা নিজেদের জানমাল ও সরকারি মালামাল রক্ষার্থে প্রথমে ফাঁকা গুলি করে। এরপরও পুলিশ সদস্যদের ওপরও হামলা করলে আত্মরক্ষার্থে ৬০ থেকে ৭০ রাউন্ড শর্টগান থেকে গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিতে হাজি মোহাম্মদ আলী নামে এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে পড়ে যান। পরে স্থানীয়রা আহত মোহাম্মদ আলীকে উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আনার পথে তার মৃত্যু হয়। এ সময় পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হয়েছেন বলে পুলিশ সুপার দাবি করেন। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এদিকে, গতকাল ময়নাতদন্ত শেষে অ্যাম্বুলেন্সযোগে পুলিশি নিরাপত্তায় নিজ বাড়িতে পৌঁছানো হয়। পরে বিকাল ৩টায় সিঙ্গুল হামিদ হামিদা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মাওলা শাহ জানান, এ ঘটনার মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।

সর্বশেষ খবর