বুধবার, ১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

শ্রমিকের মামলা নিষ্পত্তিতে ধীরগতি

♦ চেয়ারম্যান নেই এক বছর ধরে ♦ ভোগান্তির সঙ্গে বাড়ছে মামলাজট

আরাফাত মুন্না

শ্রমিকদের দেনা-পাওনাসহ শ্রম অধিকার আদায়ে মামলা করতে হয় শ্রম আদালতে। সেই আদালতের দেওয়া রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ রয়েছে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে। বর্তমানে মাত্র একজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চালাচ্ছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ। তিনি ছাড়া নেই কোনো সদস্য। ফলে শ্রমিকদের মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে ধীরগতিতে। অন্যদিকে এই ধীরগতি বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তির সঙ্গে বাড়াচ্ছে মামলা জটও। সূত্র জানায়, এক সময় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে একসঙ্গে দুটি এজলাসেও বিচারকাজ চলেছে। ওই সময় মামলা নিষ্পত্তির হারও বেশি ছিল। তবে এক বছর হলো চেয়ারম্যান পদ শূন্য। একজন সদস্য রয়েছেন। তিনিই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে কার্যক্রম চালাচ্ছেন। ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে ১ হাজার ১০৭টি মামলা বিচারাধীন ছিল। এর মধ্যে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন ১৮৫টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত আছে দুটি মামলার বিচারকাজ। শ্রম আদালতে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবীরা জানান, দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান না থাকায় বিচারপ্রার্থীরা অসহায় বোধ করেন। এমনিতেই এখানে অনেক বিচারপ্রার্থীকে পাঁচ-সাত বছর অপেক্ষা করতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে শ্রমিকদের অধিকার আদায় হবে না। তাই দ্রুত চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কাজে গতি ফিরিয়ে আনতে হবে। জানা গেছে, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফারুকের (এম ফারুক) নিয়োগ বাতিল করতে গত বছর ৯ মার্চ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। এই চিঠির পর গত বছর ২৫ এপ্রিল তার নিয়োগ বাতিল করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাইব্যুনালের সদস্য সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম এ আউয়াল। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার অধীর চন্দ্র বালা বলেন, মামলার সংখ্যা বিবেচনায় সদস্যের আরেকটি পদ সৃষ্টির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সেলিম আহসান খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এক সময় দুটি এজলাসে একসঙ্গে বিচার চলত। এখন মাত্র একজন সদস্য একটি এজলাসে বিচারকাজ পরিচালনা করেন। ফলে সাধারণ ভাবেই মামলা নিষ্পত্তিতে গতি কমে এসেছে। এ ছাড়া মাত্র একজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিচারিক দায়িত্ব পালন করায় জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোও শেষ হচ্ছে না। তাই শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে দ্রুত চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, শ্রম আদালতে একজন শ্রমিক মামলা করার পর রায় পর্যন্ত যেতে তাকে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। দিনের পর দিন আসতে হয় আদালতে। অধিকাংশ সময়ই মালিক পক্ষের অনীহার কারণে ভোগান্তিতে পড়েন শ্রমিক।

 

সর্বশেষ খবর