শনিবার, ৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবি

আট বাংলাদেশির লাশ হস্তান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া আট বাংলাদেশি নাগরিকের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বিকালে ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সায়েম ইমরানের উপস্থিতিতে লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গ থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিমানবন্দর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করেন।

ঢামেক সূত্র জানায়, লাশগুলোর মধ্যে ছিল মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার সেনদিয়া গ্রামের সজল বৈরাগী (২২), একই উপজেলার কদমবাড়ি গ্রামের মৃত পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস (১৮), সরমঙ্গল গ্রামের মামুন শেখ (২৪), কোদালিয়া গ্রামের কাজী সজীব (১৮) ও কেশরদিয়া গ্রামের তোতা খলিফার ছেলে কায়সার খলিফা (৩৫)। এ ছাড়া গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার দাদন শেখের ছেলে রিফাত শেখ (২৪), একই উপজেলার পদ্মাপট্টি গ্রামের আবুল কাশেম শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৫) এবং পদ্মাপট্টি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপন (২৩)। ঢাকা বিমানবন্দর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে আটটি লাশ বিমানবন্দরে আসে। সেখান থেকেই লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়। গতকাল মর্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফরেনসিক চিকিৎসকের সামনে কফিনগুলো খুলে দেখেন। লাশগুলো ময়নাতদন্ত হয়ে বাংলাদেশে এসেছে। পরে লাশগুলো তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় হত্যা ও মানব পাচার মামলা হয়েছে। সাতজনের নাম ও অজ্ঞাত ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলাটি করা হয়। এর মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- যুবরাজ ও কামাল। তাদের রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ সময় যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তা যাচাই করা হচ্ছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক চক্র। এদের সঙ্গে যাদের কানেকটিভিটি আছে, দেশে এবং দেশের বাইরে- তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপ যাত্রাপথে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালকসহ নৌকা তিউনিসীয় উপকূলে ডুবে যায়। এ দুর্ঘটনার পরপরই ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে। তারা লাশগুলোর সুরতহাল, শনাক্তকরণ, দেশি সংস্থার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা, মৃত্যু এবং মেডিকেল সনদ ইস্যু সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা উইং লাশ ফিরিয়ে আনতে আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয় করে। স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার মেটানো হচ্ছে। তিউনিসীয় উপকূলে এই নৌকাডুবির ঘটনায় ৪৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তার মধ্যে রয়েছন ২৭ জন বাংলাদেশি ও পাকিস্তানের ৮, সিরিয়ার ৫, মিসরের চারজন। নিহত ৯ জনের মধ্যে আটজন বাংলাদেশি ও অপরজন পাকিস্তানের নাগরিক বলে শনাক্ত হন।

সর্বশেষ খবর