মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

১৯ বছর পর সরাসরি বিমান উজবেকিস্তানে

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গতকাল বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী লোডশেডিংয়ের বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেবিনেটের কথা তো কেবিনেটে চলে গেছে। এটা বাইরে বলা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তো এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। উনি সবসময় নির্দেশনা দিয়ে গেছেন লোডশেডিং করা যাবে না, লোডশেডিং মুক্ত রাখতে হবে।

লোডশেডিং নিয়ে সারা দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারা বাংলাদেশে কিছু কিছু অঞ্চলে আমাদের কিছুটা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে অনেক জায়গায়। এটি আমরা গত এক মাস ধরে পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের বেশ কিছু পাওয়ার প্ল্যান্ট, বিশেষত ওয়েল বেইজড পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো বন্ধ আছে। সেগুলো আমরা ধীরে ধীরে চালু করছি। তেলের স্বল্পতা ছিল, অর্থ স্বল্পতা ছিল- এ বিষয়গুলোকে নজরদারি করে আমরা এখন একটি ভালো পরিস্থিতিতে আছি।

নসরুল হামিদ বলেন, এ বিষয়গুলো সংসদেও আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়গুলো সার্বিকভাবে সবাই, যারা সংসদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীও ওয়াকিবহাল। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন যেন গ্রামাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ যত দ্রুত পারা যায় ব্যবস্থা করতে। আমরা সেটাই ব্যবস্থা করে এখন একটা ভালো অবস্থায় আছি।

এর ফলে শহরে লোডশেডিং বাড়বে কি না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় না কোথাও লোডশেডিং করে অন্য জায়গায় দেওয়ার ব্যবস্থাটা করতে হবে। তবে আমি মনে করি আগের থেকে ভালো অবস্থায় এখন আমরা আছি। গ্রামে লোডশেডিং সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন কমে গেছে। আমি তো প্রতিদিন নিউজ পাচ্ছি। প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াটের মতো (লোডশেডিং) প্রথম দিকে ছিল। এখন ৫০০ থেকে জিরোর দিকে চলে আসছে। আশা করছি ভবিষ্যতে এটি ভালোর দিকে যাবে। তেলের সমস্যা কেটেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, বিপিসি থেকে তেল দেওয়ার। এখন সেটারই ব্যবস্থা চলছে।

উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ডের পরও লোডশেডিং কেন, এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড, আবার সর্বোচ্চ চাহিদাও আছে। সেটার মধ্যে তো একটা পার্থক্য আছে। কারণ এবার আপনারা দেখেছেন বিগত ৫০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। সেই তাপমাত্রার জন্য তো আমরা কেউ প্রস্তুত ছিলাম না। আমাদের জেনারেশনে যতটুকু প্রস্তুত ছিলাম আমরা সে পর্যন্ত গিয়েছি। তার ওপরে যাওয়ার জন্য আমাদের চেষ্টা ছিল। আমরা করতে পারতাম। কিন্তু মুশকিলটা হলো অর্থ এবং তেলের সংস্থান। এ দুটো জিনিসকে সমন্বয় করতে হবে। সেটা করতে আমাদের যে সময়টুকু লেগেছে তখন বেশ কিছু জায়গায়, গ্রামাঞ্চলের অনেক জায়গায় লোডশেডিং করতে হয়েছে। সার্বিকভাবে এখন পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো।

সুন্দরবন আরও কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে : সুন্দরবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সুন্দরবনে আগুন নেভানোর সর্বশেষ পরিস্থিতি জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিকালে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সুন্দরবনে যে আগুন লেগেছিল, সেই আগুনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এ বিষয়ে অবহিত করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে। আগুন শতভাগ নিভে গেছে, এমন কিছু না-নিয়ন্ত্রণে আছে। আগুন কন্ট্রোল করা গেছে। আগামী কয়েক দিন এটা পর্যবেক্ষণে থাকবে। তারা এটি দেখবেন।

মাহবুব হোসেন বলেন, বনের আগুন কিন্তু স্বাভাবিকভাবে নেভে না। আপতদৃষ্টিতে মনে হবে, নিভে গেছে। কিন্তু কোনো একটি লতা বা অন্য কিছু দিয়ে আগুনটা অনেক দূর চলে যাবে। নতুন করে আগুন জেগে ওঠে। বনের আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা করা যায় না। এখন সুন্দরবনের আগুন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে কয়েক দিন। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অবহিত হয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ফায়ার সার্ভিসের পুরো টিম ওখানে গেছে, কাজ করছে। জেলাপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণ কাজ করছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ৫৫ সদস্য এবং দেড় শর বেশি স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূরে ছিল পানির উৎস। সেখান থেকে পাওয়ার পাম্পের মাধ্যমে পানি এনে ব্যবহার করা হয়েছে। তারা অনেক পরিশ্রম করেছেন। গভীর জঙ্গল হওয়ায় রাতে কাজ করা যায় না। দিনে দিনে কাজ করতে হয়েছে। ওখানে অনেক ঝুঁকি ছিল। সব মিলিয়ে তারা খুব চ্যালেঞ্জিং কাজ করেছেন, তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।

১৯ বছর পর উজবেকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হচ্ছে : ১৯ বছর পর উজবেকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল-সংক্রান্ত চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই চুক্তির আওতায় উজবেকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বিমান চলাচল কার্যক্রম শুরু হবে। ১৯৯৩ সালে একটি চুক্তির মাধ্যমে এটি চালু হয়েছিল। তারপর ২০০৫ সালে এসে এটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন নতুনভাবে শুরু করার জন্য উজবেকিস্তানের পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে দুই পক্ষ মিলে এই চুক্তির খসড়াটি করেছে। দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী এটি করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর