মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
ভারতে নির্বাচন

অমিত-মমতা পাল্টাপাল্টি

কলকাতা প্রতিনিধি

অমিত-মমতা পাল্টাপাল্টি

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ভোটব্যাংকের স্বার্থেই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল কংগ্রেস সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেয়। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, মধু-বিধুকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দিলেই ভারতে শান্তি ফিরে আসবে। অমিত শাহ সোমবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরে নির্বাচনি সভায় বক্তৃতা করছিলেন। সভায় তিনি অনুপ্রবেশ ইস্যুতে কংগ্রেস, তৃণমূল, বামেদের এক লাইনে রেখে তীব্র সমালোচনা করেন। অন্যদিকে মমতা ব্যানার্জি বীরভূমের সাঁইথিয়ায় ও পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে নির্বাচনি প্রচারণা সভায় কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির প্রতি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন ‘ওরা বলছে বাংলা থেকে মমতা ব্যানার্জিকে হটাও। আমি বলি মমতা ব্যানার্জি যতদিন বেঁচে থাকবে, বাংলায় থাকবে, তোদের কারও ক্ষমতা নেই মমতা ব্যানার্জির একটা চুলও স্পর্শ করা।’

ওরা ১০ বছর কিছু বলেনি : অমিত শাহ বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি গোটা দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদ খতম করার সংকল্প নিয়ে কাজ করছেন। পুলওয়ামাতে জঙ্গি হামলার পরই ১০ দিনের মাথায় মোদিজি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিলেন, পাকিস্তানের ঘরে ঢুকে জঙ্গিদের খতম করেছিলেন। কিন্তু মমতা ব্যানার্জির সহায়তায় যখন কেন্দ্রে গত ১০ বছরে কংগ্রেসের সরকার চলছিল সে সময় পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আলিয়া, মালিয়া, জামালিয়া অনুপ্রবেশ করত, বোমা বিস্ফোরণ করত কিন্তু ভোটব্যাংকের কারণে এরা কিছু বলত না।’ তিনি বলেন, মমতা ও তার ভাতিজা অভিষেক ব্যানার্জিকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হলেও রামমন্দির উদ্বোধনে তাদের কেউই যাননি। কারণ তাদের নিজেদের ভোটব্যাংক নষ্ট হবে। এই ভোটব্যাংকের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শাহ বলেন, যারা অবৈধভাবে সীমান্ত অনুপ্রবেশ করে ভারতে ঢুকছে তারাই তৃণমূলের ভোটব্যাংক। আর ওরা অসন্তুষ্ট হবে সেই কারণেই তাদের ভয়ে মমতা ব্যানার্জি রামমন্দিরে যায়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এও অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেস, তৃণমূল ও বামেরা গত ৭০ বছর ধরে জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বহাল রেখেছিল। এর কারণ হলো কাশ্মীর থেকে যাতে গোটা দেশে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়তে পারে। অমিত শাহ বলেন, মোদিজি দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেই ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করেছিলেন। লোকসভায় যখন এই বিল নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল তখন বিলের বিরোধিতা করে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে কাশ্মীরে রক্তগঙ্গা বইয়ে যেতে পারে। কিন্তু প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেলেও কাশ্মীরে একটা কাঁকর জ্বালানোরও ক্ষমতা হয়নি কারও।

তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জিকে কটাক্ষ করে অমিত শাহ বলেন, গত ১৫ দিন ধরে দিদি এখানে ক্যাম্প করে রয়েছেন। দিদি দুর্গাপুরে বিজেপি প্রার্থীকে হারানোর ডাক দিয়েছেন।

 কিন্তু আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, ১৫ দিন কেন, পুরো পাঁচ বছরও যদি এখানে থাকেন, তবুও দুর্গাপুরে আপনি জিততে পারবেন না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে মন্ত্রীদের ঘরে ৫০ কোটি রুপি নগদ পাওয়া যায়। ঝাড়খে কংগ্রেস সাংসদের ঘর থেকে সাড়ে ৩০০ কোটি রুপি পাওয়া যায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ২৫ পয়সা খাওয়ার অভিযোগ নেই।

মধু-বিধুকে হটালে ভারতে শান্তি আসবে : নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহকে মধু আর বিধু বলে আখ্যায়িত করে মমতা বলেন, ওরা গোটা দেশটাকে লুট করে নিয়েছে, যদি বাঁচতে চান তবে অবিলম্বে দেশ থেকে ওদের হটান। মোদি হারলে, বিজেপি হারলে দেশের মানুষ শান্তি পাবে। মোদি যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তবে দেশ, সংবিধান, জাতি, ধর্ম বিক্রি করে দেবে। মানুষকে ভালো থাকতে দেবে না। মোদিকে একবারে শূন্য করে দিতে হবে। তার কারণ মোদিকে যদি ভোট দেন তবে সিএএ করবে, এনআরসি করবে, আর সবাইকে তাড়িয়ে দেবে। তফশিলি, আদিবাসী, মুসলিম, হিন্দুরা তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাবে না। মমতা বলেন, জীবনে আমি অনেক প্রধানমন্ত্রী দেখেছি কিন্তু এত মিথ্যাবাদী, অত্যাচারী, হিংসুটে, স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী দেখিনি। যাদের জীবন শুরু হয়েছে দাঙ্গার মধ্য দিয়ে, তাদের কাছ থেকে কী শান্তি প্রত্যাশা করা যায়!

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর