শিরোনাম
শনিবার, ১১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিধ্বস্ত বিমান উদ্ধার

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় বৈমানিক জাওয়াদ চিরসমাহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

বিধ্বস্ত বিমান উদ্ধার

বিমান বাহিনীর বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের ধ্বংসাবশেষ কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘বলবান’-এর সহায়তায় বিমানটি উদ্ধার করা হয়। কোস্টগার্ড পূর্বাঞ্চলের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সুয়াইব বিকাশ জানান, ‘নৌবাহিনীর ডুবুরি দল ও কোস্ট গার্ডের সম্মিলিত চেষ্টায় বিমানটি নদীর তলদেশ থেকে উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। রাতেই বিমান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’ জানা যায়, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে জোয়ার ও তীব্র স্রোতের বিপরীতে লড়াই করে নৌবাহিনীর ডুবুরি দল আধুনিক যন্ত্রপাতির সহযোগিতায় জাহাজটি শনাক্তের কাজ শুরু করে। রাত ১০টায় বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানটি টেনে তোলে উদ্ধারকারী জাহাজ বলবান। উদ্ধারের পর বিমানটি পরিদর্শন করেছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে তা বিমান বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন জাওয়াদকে : এদিকে নিজ জেলা মানিকগঞ্জে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদকে। গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে তৃতীয় জানাজা শেষে মানিকগঞ্জের সেওতা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জাওয়াদের লাশ বহনকারী বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে নামে। কিছুক্ষণ পর হেলিকপ্টার থেকে তার লাশের কফিন কাঁধে করে নামিয়ে আনেন বিমানবাহিনীর সদস্যরা। পরে তাকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। ছেলের লাশবাহী কফিন দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা নিলুফা খানমসহ তার স্বজনরা। এ সময় স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ রিফাতের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এর আগে ঢাকা সেনানিবাসের বিএএফ বেস বাশার-এ তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় সেখানে জাওয়াদের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সেনাবাহিনী প্রধানের পক্ষ থেকে চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএফ) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বিমানবাহিনী প্রধানের পক্ষ থেকে সহকারী বিমানবাহিনী প্রধান (পরিচালন) এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন এবং নৌবাহিনী প্রধানের পক্ষ থেকে ঢাকা নৌ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল মরহুমের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর আগে সকালে চট্টগ্রামে বিমানবাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকের প্যারেড গ্রাউন্ডে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা জহুরুল হক বিমান ঘাঁটি থেকে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণ পরই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় এবং বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। কর্ণফুলী নদীতে ভূপাতিত হওয়ার আগেই বিমানে থাকা বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান ও বৈমানিক স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ প্যারাসুট দিয়ে নদীতে নামলেও আহত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আসিম জাওয়াদ মারা যান। বিমানের উইং কমান্ডার সোহান জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল স্কোয়াড্রনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর