সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

দানশীল প্রার্থী জসীম শোধ করেন না ব্যাংক ঋণ

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

দানশীল প্রার্থী জসীম শোধ করেন না ব্যাংক ঋণ

জসীম উদ্দীন আহমেদ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কক্সবাজারের বিলাসবহুল হোটেল রামাদার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চন্দনাইশে রয়েছে একাধিক বাণিজ্যিক ভবন, বিলাসবহুল বাড়িসহ অঢেল সম্পদ। দানশীল, গরিব দরদি, চন্দনাইশের মানবিক ও মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে নিজ এলাকায় পরিচিত এই ব্যবসায়ী। কিন্তু পদ্মা ব্যাংক থেকে নেওয়া ৬০ কোটি টাকার ঋণ আট বছরেও পরিশোধ করেননি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী জসীম। পদ্মা ব্যাংক থেকে নেওয়া ৬০ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে জসীমের কাছে এখন সুদসহ ব্যাংকের পাওনা প্রায় ৮৮ কোটি টাকা। ঋণ শোধ না করায় এই খেলাপির বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ রয়েছে আদালতের। আছে গ্রেফতারি পরোয়ানাও। এরপরও তার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আলোচিত প্রার্থী জসীম উদ্দীন আহমেদ জেসিকা গ্রুপের চেয়ারম্যান। হলফনামায় নিজেকে স্বশিক্ষিত উল্লেখ করা জসীমের পেশা ব্যবসা। নিজেকে জেসিকা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও হোটেল আইবিআইএস লিমিটেডের মালিক উল্লেখ করেছেন। বাড়ি, এপার্টমেন্ট বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ আয় দেখিয়েছেন ১ কোটি ৮ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮৩ টাকা। বৈদেশিক খাত থেকে আয় দেখিয়েছেন ৬৩ লাখ ৯ হাজার ৫৯২ টাকা। অর্থঋণ আদালতের এক আদেশে জসীমকে হোটেল রামাদা কক্সবাজারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হলেও হলফনামায় তা উল্লেখ নেই। পদ্মা ও সোনালী ব্যাংক থেকে সর্বমোট ৭১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ঋণের কথা উল্লেখ করলেও হলফনামায় খেলাপি হওয়ার তথ্য গোপন করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্টেও তার খেলাপি হওয়ার তথ্য নেই। এ ছাড়া তার অঢেল সম্পদ থাকলেও তা হলফনামায় নেই। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জসীম উদ্দীনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় না থাকা সত্ত্বেও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। মূলত, পুলিশের সাবেক এক আইজিপি ও তার ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর সহযোগিতায় অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন আলোচিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জসীম।

২৯ মে অনুষ্ঠিতব্য তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চন্দনাইশ উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জসীম উদ্দীন। গত ৫ মে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে জসিমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এ ব্যাপারে জানতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘প্রার্থিতা যাচাইয়ের সময় সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) রিপোর্টে ঋণখেলাপি না দেখানোয় আমরা জসীম উদ্দীনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছি। সিআইবি রিপোর্টে না থাকলে আমাদের জানার সুযোগ সীমিত।’ সার্বিক বিষয়ে জানতে জসীম উদ্দীন আহমেদকে একাধিকবার ফোন করলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর