মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

দ্রব্যমূল্যের চাপ কমাতে কয়েক দফা নির্দেশনা

♦ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা ♦ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি বিলাসী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহ করার তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জনগণের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বাজেট প্রণয়ন সংক্রান্ত এক সভায় তিনি এসব নির্দেশনা দিয়েছেন। সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থবিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রাহমাতুল মুনীমসহ বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় দেশের বর্তমান সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী বাজেটের সম্ভাব্য আকার তুলে ধরেন অর্থ সচিব। অর্থ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত রাখা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বিলাসবহুল জিনিসপত্র আমদানি নিরুৎসাহিত করা, আগামী অর্থবছরের বাজেটে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় অর্থ বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়, নির্বাচনি ইশতেহারের প্রতিফলন থাকবে আসছে বাজেটে। নির্বাচনি ইশতেহারের প্রতিফলনের উদ্যোগ নেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি সতর্কতার সঙ্গে প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা দেন। আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়বে বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়শা খান। তিনি বলেন, এবার বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বাধিক প্রাধিকার পাচ্ছে। ‘নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। বাজেটে কর অবকাশ সুবিধা উঠিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে অর্থ প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, যেসব খাত দীর্ঘদিন কর অবকাশ সুবিধা পেয়ে আসছে, সেসব খাতে কর অব্যাহতির সুবিধা উঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটি আমরা সুনির্দিষ্টভাবে খতিয়ে দেখছি। কয়েকটি খাত গত ২০ থেকে ২৫ বছর কর অবকাশ সুবিধা পেয়ে আসছে। এই সুবিধার কারণে এখন তারা যথেষ্ট সক্ষমতা অর্জন করেছে এবং দেশের বাজার দখলে নিয়েছে। জানা গেছে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমতে থাকলে ঋণ পরিশোধে সরকারের চাপ বাড়বে। এতে বাড়বে ভর্তুকির পেছনে ব্যয় ও প্রকল্পের ব্যয়। সব মিলিয়ে অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা তৈরি হতে পারে। এমনকি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা সামগ্রিক আর্থিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় সরকারের কার্যকারিতা সীমিত করতে পারে। সুদের হার বাজারভিত্তিক করার কারণে অর্থ ধার করার খরচ বাড়বে। ফলে ঋণের সুদ পরিশোধ বাড়লেও বাজেটের আকার বাড়ানো হচ্ছে না। অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরে বাজেটের আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৫ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে ২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে বাজেট ঘাটতি মেটানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ পাওয়া যাবে বলে আশা করছে সরকার। বাকি ১ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা দেশের ব্যাংকিং খাতসহ অন্যান্য উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর