শিরোনাম
শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ডলার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে উদ্বেগ জানালেন ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বারবার নীতি পরিবর্তনে অস্থিরতা বাড়ছে দেশের সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে। ডলার নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। বাজারভিত্তিক করায় সুদহার বেড়েছে, আরও বাড়বে। এ সবকিছু নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গিয়ে বৈঠক করেছেন গভর্নরের সঙ্গে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সাক্ষাতে তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা জানান। বৈঠক শেষে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন ডলারের মূল্য ৮৫ টাকা থেকে ১১০ টাকা এবং বর্তমানে ১১৭ টাকা হওয়ায় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা আর্থিক ভাবে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে এবং ঋণ খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার ও উৎপাদন চালু রাখতে বিনিময় হারজনিত ক্ষতির অর্থ কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ চেয়েছেন তারা। এ জন্য ঋণ গ্রহীতাদের দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৫ বছরের কিস্তি চাওয়া হয়েছে। বৈঠকে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান, বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি, বিটিএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি আমিন হেলালী ও সহসভাপতি মো. মুনির হোসেন, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের সিইও আহসান খান চৌধুরী, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মাহবুবুল আলম বলেন, ডলারের বিনিময় হার ১১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা চেয়েছি এটা যেন আর পরিবর্তন না করা হয়। গভর্নর বলেছেন ১১৭ টাকার ১ টাকা কম বা বেশির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে ডলারে দাম। ব্যাংকগুলোকে একই রেটে এলসি করতে হবে। ব্যবসায়ীরা এই রেটে এলসি খোলার নিশ্চয়তা চেয়েছেন গভর্নরের কাছে। ডিসেম্বরের মধ্যে সংকট কেটে যাবে বলে আশ্বস্ত করে গভর্নর বলেছেন ডলারের সমস্যা কাটিয়ে উঠছেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডলারের সমস্যা আছে। সুদের হার ১৪ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত না বলে জানিয়েছেন গভর্নর। এটা প্রায় নির্ধারিত সুদহার। যাতে ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে ভবিষ্যতে। তিনি বলেন, আমরা একক গ্রাহক ঋণ সীমা ১৫ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ, উৎপাদন খাত সুরক্ষা দিতে স্বল্পমেয়াদি ঋণকে দীর্ঘমেয়াদিতে রূপান্তর, নিয়মিত এলসি খোলার পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।

এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, সামগ্রিক ব্যাংক খাত একটু বিপদে আছে। সুদহার, বিনিময় হার, বিনিময় হারের কারণে লোকসান নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে কথা হয়েছে। ডলার রেট অফিশিয়ালি ১১০ টাকা হলেও আনঅফিশিয়ালি আরও বেশি ছিল। আমরা বলেছি সুদহার যেন আর না বাড়ে। সুদ বাড়লে খেলাপি ঋণ বাড়বে। একক গ্রহীতার ঋণসীমা না বাড়লেও খেলাপি ঋণ বাড়বে। কারণ এগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা যুক্ত। বিনিময় হারের কারণে বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিপুল লোকসান হয়েছে। এটা থেকে বের হওয়ার জন্য একটি রোডম্যাপ যেন থাকে, আমরা সেটাই বলেছি। বিনিময় হারজনিত ক্ষতির অর্থটা যাতে আলাদা করে দীর্ঘমেয়াদি একটা কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া যায়, সেটাই তারা চিন্তাভাবনা করছেন বলে আমাদেরকে জানিয়েছেন। আর সুদহার যে ১৪ শতাংশের ওপরে না যায়, সেটাও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নজরদারি করবে।

বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে বহু উদ্যোক্তা শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। অর্থনৈতিক ও শিল্প অঞ্চলের বাইরে শিল্প কারখানা স্থাপন করা যাবে না বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সার্কুলার স্থগিত করার অনুরোধ করেছি।

সর্বশেষ খবর