শিরোনাম
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

দেশে প্রতি চারজনে একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে প্রতি চারজনে একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত

দেশে ৩ কোটির বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন এই রোগের শিকার। আক্রান্তদের ৫৯ শতাংশ জানেনই না যে তারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। আক্রান্ত জানলেও অনেকেই নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন না। অবহেলায় উচ্চ রক্তচাপ ডেকে আনছে স্ট্রোক, কিডনি, হৃদরোগের মতো নানা ব্যাধি। এ পরিস্থিতিতে গতকাল পালিত হয়েছে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন।’ ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল রিপোর্ট অন হাইপারটেনশন-২০২৩ -এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ২ লাখ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেছেন, যার ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ। বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭০ শতাংশের জন্য অসংক্রামক রোগ দায়ী হলেও এসব রোগ মোকাবিলায় অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ খুবই সামান্য, মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশ।

দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা। আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল ‘বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ পরিস্থিতি ও করণীয়’ বিষয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)।

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটাই কমানো সম্ভব। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তবে ওষুধ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে এ খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।’

স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. এনামুল হক বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে যে উচ্চ রক্তচাপ পরীক্ষা ও ওষুধে ১ টাকা বিনিয়োগ করলে সামগ্রিকভাবে ১৮ টাকার সুফল পাওয়া যায়। এ খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষভাবে তা ব্যবহার করা সম্ভব হলে উচ্চ রক্তচাপজনিত অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।’ স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। এই কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, অনেকে রোগ আছে জেনেও চিকিৎসা নিচ্ছেন না। আবার চিকিৎসা নিয়েও অনেকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন না। ওষুধের দাম, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ওষুধ না পাওয়ার কারণে হয়তো কেউ কেউ মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করছেন। আবার এমনও হতে পারে যে অনেকে জানেন না যে ওষুধ দীর্ঘকাল খেয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে গাইডলাইন রয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। সম্মিলিতভাবে কাজ করলে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ মোকাবিলা করা সম্ভব।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর