শিরোনাম
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বজ্রপাতে সাত মৃত্যু

প্রতিদিন ডেস্ক

নরসিংদী, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরে গতকাল সকালে বজ্রপাতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নরসিংদীতে পৃথক ঘটনায় মা-ছেলেসহ চারজন, টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জমিতে ধান কাটতে গিয়ে দুজন কৃষি শ্রমিক এবং গাজীপুরের শ্রীপুরে উঠান থেকে ধান সরিয়ে নেওয়ার সময় এক নারীর মৃত্যু হয়। আমাদের নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, নরসিংদীতে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় মা-ছেলেসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার আলোকবালী উত্তরপাড়া এবং শহরতলির হাজীপুরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- আলোকবালী উত্তরপাড়ার কামাল মিয়ার স্ত্রী শরিফা বেগম (৫০) ও তার ছেলে ইকবাল হোসেন (১২) এবং করম আলীর ছেলে কাইয়ুম মিয়া (২২)। এ ঘটনায় কামাল মিয়া নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। নিহত এবং আহত সবাই আলোকবালী উত্তরপাড়ার বাসিন্দা। তারা ধান কাটতে জমিতে অবস্থান করছিলেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের চকপাড়ায় মোছলেহ উদ্দিন (৫০) নামে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ জানান, নিহতরা সবাই ধান কাটার জন্য কৃষিজমিতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় বিকট শব্দে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটলে শরিফা বেগম এবং তার ছেলে ইকবাল ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে আনার পথে মারা যান কাইয়ুম নামের অপরজন। এতে কামাল হোসেন নামে আহত আরেকজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া হাজীপুরে বজ্রপাতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, কালিহাতী উপজেলায় ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুই কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া দুই শ্রমিকের নাম আফজাল হোসেন (৫২) ও আমির হোসেন (৫৫)। আফজাল হোসেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার চকদফরপুর গ্রামের মৃত নুর হোসেনের ছেলে। আমির হোসেন একই গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে। সম্পর্কে তারা খালাতো ভাই। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে শ্রমিকরা জমিতে ধান কাটার কাজ করছিলেন। এ সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ বজ্রপাতে ওই দুই কৃষি শ্রমিক মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ দুটি উদ্ধার করে। স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার আউলিয়াবাদ বাজারে ঘরভাড়া নিয়ে সেখানে থেকে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার কাজ করতেন তারা। শনিবার ভোরে হযরত আলীর ধান খেতে তারা ছয়জন শ্রমিক ধান কাটতে যান। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে ধান খেত থেকে দৌড়ে বাড়ি যাওয়ার সময় আফজাল ও আমিরের ওপর বজ্রপাত হয়। ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান। বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে দুজনের মৃত্যু হলেও আহত হন আরও চারজন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। কালিহাতী থানার এসআই রাজীব পারভেজ জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ দুটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় বজ্রপাতে ফাতেমা আক্তার (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি গলদাপাড়া গ্রামের মো. নূর হোসেনের স্ত্রী। নিহতের ছেলে জহিরুল ইসলাম জানান, তার মা ফাতেমা আক্তার সকালে নানার বাড়িতে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন। ঝড়বৃষ্টি আসছে দেখে উঠান থেকে তিনি ধান ওঠাতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে ফাতেমা মাটিতে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তার মাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শ্রীপুর উপজেলা জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাবিনা জানান, ওই নারীকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। পরে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. তানসেন চৌধুরী বজ্রপাতে নারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ওই নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বজ্রপাতে তার শরীরের বাম পাশ ঝলসে গেছে।

সর্বশেষ খবর