বুধবার, ২২ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলছে না

এমপি আনার অপহৃত নাকি আত্মগোপনে, দুই সহচরের খোঁজে গোয়েন্দারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলছে না

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার কি অপহৃত হয়েছেন, নাকি আত্মগোপনে রয়েছেন- নিখোঁজের সাত দিন পর এমন প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। এ প্রশ্নের উত্তর মেলাতে ভারত এবং বাংলাদেশে চলছে অভিযান। ভারতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিখোঁজ জিডির সূত্র ধরে কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, তার মোবাইল ফোন হঠাৎ হঠাৎ চালু হলেও সর্বশেষ অবস্থান নিয়েও রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। কখনো বিহারের মোজাফফরাবাদ আবার কখনো বাংলাদেশের ঝিনাইদহে মোবাইল ফোনের অবস্থান পাওয়া গেছে। এ নিয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে উদ্ধারে কাজ করছে। ঝিনাইদহের বেশ কিছু এলাকায় অভিযান চলছে। ‘ম’ এবং ‘ফ’ আদ্যাক্ষরে এমপি আনারের দুই ঘনিষ্ঠ সহচরকে গোয়েন্দারা খুঁজছে। এ দুজনকে পেলেই এমপি আনারের নিখোঁজ রহস্যের জট খুলবে বলে সূত্র জানায়।

এদিকে সাত দিনেও এমপি আনারের খোঁজ না পাওয়ায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বাড়ছে সর্বমহলে। তার খবর জানতে প্রতিদিনই দলীয় নেতা-কর্মীরা কালীগঞ্জ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন। অজানা আতঙ্কে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল বলেছেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া আনোয়ারুল আজিম আনারের কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন মন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের ও ভারতের ইমিগ্রেশন পার হয়ে যথাযথভাবেই তিনি ভারতে যান। তার পরিবার থেকে আমাদের জানানো হয়েছিল, তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি সব সংস্থা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ভারতীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি, ভারতীয় সরকারের মাধ্যমে শিগগিরই তার বিষয়ে জানতে পারব। সূত্র জানায়, গত ১৬ মে সকালে এমপি আনারের অবস্থান ছিল বিহারের মোজাফফরাবাদ। সেখান থেকে পিএস আবদুর রউফ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর ফোনে কল করা হয়। তবে ওই ফোনকল প্রকৃতপক্ষে এমপি আনার করেছিলেন কি না তা নিয়ে নতুন করে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। অপর একটি সূত্র বলেছে, তার ফোনের অবস্থান এক সময়ে ঝিনাইদহেও ছিল। আবদুর রউফ জানান, ভারতে যারা রয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু এমপি মহোদয় সম্পর্কে নতুন করে কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বিশ্বস্ত একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, এমপি আনারের ভারতে কতিপয় ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসা ছিল। হয়তোবা সেই ব্যবসার বিরোধের জের ধরে কোনো একটি গোষ্ঠী তাকে লুকিয়ে রাখতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এমপি আনারের বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালান, মাদক কারবার এবং হুন্ডির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তার এসব ব্যবসা নিয়েও শত্রুতা থাকতে পারে। আবার নারী ঘটিত কিছু অভিযোগও খুঁজে পেয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব সামনে রেখেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে টানা তিন বারের এমপি। এর আগে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন।

সর্বশেষ খবর