শিরোনাম
বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

সরকারি চাকরিতে শূন্যপদ পৌনে ৪ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি চাকরিতে শূন্যপদ পৌনে ৪ লাখ

জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, সরকারি চাকরিতে এখনো ৩ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৭টি পদ শূন্য। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ৫ লাখের বেশি। এ ছাড়াও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগও সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসির) অধীন করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গতকাল সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত এক সংলাপ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানান জনপ্রশাসনমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএসআরএফের সভাপতি ফসীহ উদ্দিন মাহতাব ও সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক। জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদ আছে ১৯ লাখ ১৫১টি। এর মধ্যে শূন্য আছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৭টি। ২০২২ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী শূন্য পদ ছিল ৫ লাখ ৩ হাজার ৩৩৩টি। জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে ২৮ থেকে ৪১তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ৪২ হাজার ৯৩১ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৬৯ হাজার ২৩৯ জনকে ননক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৪০ জনকে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিভিন্ন রকমের অনিয়মের অভিযোগে গত ৫ বছরে (২০১৯ থেকে ২০২৪) তদন্তের মুখে পড়েছেন প্রশাসনের ১৭৮ জন কর্মকর্তা। তাঁদের মধ্যে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ২২ জনের গুরুদন্ড ও ৬৯ জনের লঘুদন্ড হয়েছে। অর্থাৎ ৯১ জনের শাস্তি হয়েছে। বাকি ৮৭ জনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, বিগত ১০ বছরে (২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত) ১ম থেকে ৯ম গ্রেডের ৩৫১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। এর মধ্যে গুরুদন্ড পেয়েছেন ৪১ জন, লঘুদন্ড পেয়েছেন ১৪০ জন। সবমিলিয়ে শাস্তি পেয়েছেন ১৮১ জন। আর ১৭০ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত বিভাগীয় মামলা চলে। যদি কোনো কর্মকর্তার বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়, তাহলে সেটি আমলে নিয়ে বিভাগীয় মামলা করা হয়। এ বিষয়ে প্রথমে প্রাথমিক তদন্ত করে সত্যতা বোঝার চেষ্টা করা হয়। কারণ, বিভাগীয় মামলা করতে গেলে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে করতে হয়। এতে শুনানি হয়, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। পুরস্কারের পাশাপাশি শাস্তির ব্যবস্থাও থাকতে হবে। বিসিএসে নারীরা পিছিয়ে যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, নারীরা পিছিয়ে যাচ্ছে না বরং নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। ৩৫তম বিসিএসে নারী কর্মকর্তা রয়েছেন ২৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ১০০ জনের মধ্যে নারী ২৮ জনের মতো। ৩৬তম বিসিএসে নারী কর্মকর্তা ২৬ দশমিক ২২ শতাংশ। ৩৭তম বিসিএসে দেখেছি ২৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ৩৮তম বিসিএসে ২৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। ৪০তম বিসিএসে দেখেছি নারীদের হার ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ। সবশেষ ৪১তম বিসিএসে ২৬ দশমিক ৭১ শতাংশ নারী প্রার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন পদায়নের জন্য। নারীদের ১০ শতাংশ কোটা বাতিলের পরও তাঁরা আগের মতো নিয়োগ পাচ্ছেন। এ ছাড়া সরকারি চাকরিতে ২৯ শতাংশ নারী আছেন বলে জানান জনপ্রশাসনমন্ত্রী। বিভিন্ন বিসিএসে গড়ে ২৬ থেকে ২৭ শতাংশ নারী নিয়োগের সুপারিশ পাচ্ছেন। তবে কোনো কোনো বিশেষ বিসিএসে নারীর এই হার আরও বেশি। এ ছাড়াও প্রশাসনে সহকারী কমিশনার (ভূমি) থেকে সচিব পর্যন্ত কোন পদে কতজন নারী বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন সে তথ্যও জানান জনপ্রশাসনমন্ত্রী। ফরহাদ হোসেন বলেন, বর্তমানে ৮৪ জন সচিবের মধ্যে নারী সচিব আছেন ১১ জন। জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাত ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আছেন ১৫১ জন। এ ছাড়া অতিরিক্ত সচিব পদে ৭৫ জন, যুগ্ম সচিব পদে ১৬৪, উপসচিব পদে ৩৯৪ ও সিনিয়র সহকারী সচিব পদে ৬৫৮ জন নারী আছেন। এ ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার পদে একজন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে ৮৮ জন নারী কর্মরত আছেন।

গাড়ি কেনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ডিসি ও ইউএনওদের জন্য ২৬১টি গাড়ি কেনার জন্য তিন বছর ধরে অপেক্ষা করা হচ্ছিল। অনেক গাড়ির বয়স ১৭ বছর হয়েছে, সেগুলো সড়কে ঠিকমতো চলবে না। করোনার সময় ব্যয় সংকোচন নীতি ছিল, যা সফলভাবে পার করা গেছে। তাই এখন ধীরে ধীরে কিছু গাড়ি কেনা হচ্ছে। ১৬১টি গাড়ি তৈরির সরঞ্জাম প্রগতির কাছে আছে। গাড়ির প্রকৃত দাম ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার। আর প্রতিটি গাড়ির ট্যাক্স ১ কোটি ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা। এসব গাড়ি ১৯ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত চলবে। ট্যাক্স হিসাবে এনবিআর বা অর্থ মন্ত্রণালয় টাকাটা পেয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর