শিরোনাম
সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
সামাজিক অপরাধে নৃশংসতা

হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে গলা কেটে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার শাজাহানপুরে আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষ থেকে মা ও তার এক বছর বয়সি ছেলের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে শাজাহানপুর থানা পুলিশ ওই আবাসিকের কক্ষের ভিতর থেকে ভিকটিম আশামনির বিবস্ত্র অবস্থায় এবং ছেলে রাফির গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত আশামনি বগুড়া শহরের নারুলী তালপট্টি এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে। নৃশংস এ ঘটনায় আশামনির স্বামী আজিজুল হককে (২৩) আটক করেছে পুলিশ। জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়ার হামিদুর রহমানের ছেলে আজিজুল হক শাজাহানপুর উপজেলার বনানী মোড়ের শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলে উঠে কক্ষ ভাড়া নেন। এ সময় আজিজুল নিজেকে পীরগঞ্জের বাসিন্দা এবং নিজেকে মিরাজ বলে পরিচয় দেন। তার স্ত্রীর নাম দেন তমা (আশামনি)। পরে গতকাল সকাল ১১টায় কক্ষের ভাড়া দিতে এসে আজিজুল হক অসংলগ্ন কথাবার্তা বললে হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। পরে পুলিশকে জানালে তারা এসে হোটেলের কক্ষে গিয়ে লাশ দেখতে পায়। বগুড়ার শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে আজিজুল হককে আটক করা হয় এবং ওই কক্ষ থেকে লাশ পাওয়া যায়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। তার এক বছর বয়সি ছেলে আব্দুল্লাহ্ আল রাফির মাথাবিহীন লাশ বস্তায় ভরা ছিল। আর শিশুটির মস্তক পাশের করতোয়া নদীতে ফেলে দেয় বলে জানিয়েছে। গতকাল দুপুরে লাশ দুটি উদ্ধারের পর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত আশামনির ভাই মেহেদি হাসান সনি জানান, আজিজুল হকের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে তার বোনের বিয়ে হয়। দুই মাসের ছুটি নিয়ে কিছুদিন আগে বগুড়ায় আসে। শনিবার বেড়ানোর কথা বলে আজিজুল হক তার বোন ও ভাগনেকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তার বোনের সঙ্গে ভগ্নিপতির দাম্পত্য কলহ ছিল। তার ধারণা, দাম্পত্য কলহের কারণেই তাদের খুন করা হয়েছে। নিহত আশামনির বাবা আসাদুল ইসলাম জানান, রাত থেকে মেয়ের ফোন বন্ধ। কোনো সন্ধান না পেয়ে বগুড়া সদর থানায় সকাল ১১টার পর জিডি করতে যান। এরপর পুলিশের মাধ্যমে তিনি মেয়ের লাশের সন্ধান পান। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বনানী মোড়ের শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর আজিজুল হক তার স্ত্রী ও এক বছর বয়সি সন্তানকে নিয়ে দোতলার একটি কক্ষে ওঠেন। এরপর রাত ১১টার দিকে তিনি হোটেল থেকে বের হয়ে যান। গতকাল সকাল ১১টার দিকে আজিজুল হক হোটেলে কক্ষের ভাড়া পরিশোধ করতে আসেন। কিন্তু তখন তার সঙ্গে স্ত্রী-সন্তান না থাকায় সন্দেহ হয়। পরে তাকে কৌশলে আটক করে পুলিশে খবর দেই। পুলিশ এসে ওই কক্ষের ভিতরে আজিজুল হকের স্ত্রী-সন্তানের লাশ দেখতে পায়।বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) সরাফত ইসলাম জানান, আবাসিকের কক্ষ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি রামদা এবং একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। আজিজুল তার স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে কক্ষের বাথরুমে রাখে। আর সন্তানের গলা কেটে মাথা আলাদা করে বস্তায় ভরে। সকালে সন্তানের বিচ্ছিন্ন মাথাটি পাশের করতোয়া নদীেেত ফেলে দেয়। সেটি উদ্ধারে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর