সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
সামাজিক অপরাধে নৃশংসতা

ছুরি মেরে ও গলা কেটে দুই নারীকে খুন

প্রতিদিন ডেস্ক

গতকাল সকালে শত শত শ্রমিক যখন কাজে যোগদান করতে ইপিজেডের প্রধান ফটক দিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন, তখন সবার সামনেই এক নারী কর্মীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এক দুর্বৃত্ত। উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে নারী কর্মীটি রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। নিহত নারী কর্মীর নাম রিনা। পরে স্থানীয়রা হত্যাকারীকে আটক করে পুলিশে দেয়। এ সময় জানা যায়, হত্যাকারী নিহতের সাবেক স্বামী, নাম মিলন। এদিকে জমিজমার বিরোধে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে পাপিয়া বেগম (৪৫) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। গতকাল ওই ঘটনায় মূলহোতাসহ তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে গাইবান্ধা র‌্যাব। আমাদের পাবনা প্রতিনিধি জানান, সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে রিনা বেগম (৩৫) নামে ঈশ্বরদী ইপিজেডে কর্মরত এক গার্মেন্টস কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহত রিনা রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকসিংগীপাড়া গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিলন হোসেনের সাবেক স্ত্রী। তিনি ঈশ্বরদী ইপিজেডের রেনেসাঁ বারিন্দ লিমিটেড নামক একটি পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানান, সকালে শত শত শ্রমিক যখন কাজে যোগদান করতে ইপিজেডের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করছিলেন, তখন সবার সামনেই সাবেক স্বামী মিলন নিহত রিনাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে সে রাস্তায় পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ সময় স্থানীয়রা হত্যাকারীকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গ্রেফতার মিলন পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানান তিনি।

পুলিশ আরও জানায়, ২০০৮ সালে তাদের প্রথম বিয়ে হয়, মাঝে বনিবনা না হওয়ায় ছাড়াছাড়ি হয়। তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। এরপর ২০২০ সালে আবারও তারা বিয়ে করে সংসার শুরু করে। কিন্তু স্বামীর নির্যাতন শুরু হলে তিনি আলাদা হয়ে যান। নিজের মতো জীবনযাপন করতে রিনা ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরি নেন। এ সময় স্বামী মিলন স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে চায়। কিন্তু স্বামী মাদকাসক্ত বিধায় রিনা তার সঙ্গে থাকতে আপত্তি করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহবিবাদ লেগেই থাকত। এরই জেরে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাদের মধ্যে বাগ্বিত ার একপর্যায়ে মিলন স্ত্রী রিনাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে।

গাইবান্ধায় গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৩

গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে পাপিয়া বেগম (৪৫) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মূলহোতাসহ তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতাররা পলাশবাড়ী উপজেলার বিরামের ভিটা এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে রাব্বি মিয়া (২৬) ও পাপুল মিয়া (৩০) ও পাপুলের স্ত্রী ইসমোতারা বেগম (২৬)। নিহত পাপিয়া বেগম একই এলাকার নুরুল হক মাস্টারের মেয়ে ও মনোহরপুর এলাকার রিজু মিয়ার স্ত্রী। গতকাল সকালে র‌্যাব-১৩ গাইবান্ধার স্কোয়াড্রন লিডার মাহমুদ বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১১টার দিকে র‌্যাব-১৩ গাইবান্ধা ও র?্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানাধীন চর কাশিপুর এলাকা থেকে আসামি রাব্বি মিয়া, পাপুল মিয়া ও পাপুলের স্ত্রী ইসমোতারা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা পাপিয়া হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি বলে স্বীকার করেছে। আসামিদের পলাশবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পলাশবাড়ী উপজেলার বিরামের ভিটা এলাকার নিহত পাপিয়া বেগমের সঙ্গে একই এলাকার রাব্বি মিয়া, পাপুল মিয়া ও ইসমোতারাদের পূর্ব থেকে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে গত ১৮ মে সকালে গ্রেফতার আসামিরাসহ আরও অনেকে পাপিয়াকে ঘটনাস্থলে দেশি অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে এবং ধারালো ছোরা দিয়ে শ্বাসনালি কেটে রক্তাক্ত জখম করে। স্থানীয়রা পাপিয়াকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত পাপিয়ার ভাই আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পলাশবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাব্বি মিয়াকে প্রধান আসামি করে নামীয় আটজন ও অজ্ঞাত দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়। এরপর থেকে আসামিরা আত্মগোপনে ছিলেন।

সর্বশেষ খবর