সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
সামাজিক অপরাধে নৃশংসতা

চিরকুটে লেখা ধর্ষককে মেরে শান্তি নিলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকার একটি বাসা থেকে মো. আরিফুল ইসলাম নামে এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ। যেখানে লেখা রয়েছে, ‘আমার জীবনের শান্তি নষ্ট করে দিছে এই রেপিস্ট, ব্ল্যাকমেইলার। সে তার নিজের ইচ্ছায় আমার হাতে ধরা দিছে। নিজের হাতে এই রেপিস্ট, ব্ল্যাকমেইলারকে মেরে শান্তি নিলাম।’ গত শনিবার সন্ধ্যায় আরিফুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। গতকাল ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জানা গেছে, আরিফুলের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর থানার উত্তর কামালপুরে।

ঘটনার ব্যাপারে জানা গেছে, ভাটারা এলাকার ওই বাসা থেকে পুলিশের কাছে ফোন যায়। জানানো হয়, ভাটারা এলাকার একটি বাড়ির দোতলায় একজনের লাশ পাওয়া গেছে। এমন খবর পেয়ে পুলিশ ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। সিআইডির ক্রাইম সিন পর্যবেক্ষণ করে জানায়, লাশের বুকে ও গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যেখানে দেখা গেছে, ১৮ মে ভোর ৬টা ৩১ মিনিটে মোসা. পারভীন আক্তার নামে এক নারী ওই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে একা বেরিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে, আরিফুলের স্ত্রী পারভীন। তিনি কানাডায় থাকেন। কানাডা থেকে এসে পরিকল্পিতভাবে আরিফুলকে হত্যা করে আবারও কানাডায় ফিরে গেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আরিফুল জাপান ও তার স্ত্রী পারভীন কানাডা প্রবাসী। গত ১৭ মে তারা দুজন ভাটারা এলাকায় সাত দিনের জন্য একটি বাসা ভাড়া নেন। পারভীনের সঙ্গে আরিফের প্রেম ছিল, তবে তার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে কি না তার পরিবার জানত না। তবে আরিফুল ও পারভীনের নোটারি করা বিবাহের হলফনামা ফ্ল্যাটের মধ্যে থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে জাপানে আয়েশার (জাপানি নাম নাচুকি) সঙ্গে গত বছর আরিফুলের বিয়ে হয়।

নোটারি করা বিয়ের হলফনামা দেখা যায়, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ সালে নরসিংদীতে আরিফুল ও পারভীনের বিবাহ হয়। আরিফের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আরিফের বোন জানায়, ‘জাপান থেকে তার ভাবি আজকে (শনিবার) ফোন করে বলে, আরিফুল দেশে গিয়েছে, কিন্তু তার কোনো খোঁজখবর পাচ্ছি না। ফোনে কয়েকদিন ধরে কথা বলতে পারছি না।’ পুলিশের ধারণা, জাপান থেকে পরিকল্পিতভাবে আরিফুলকে দেশে নিয়ে আসেন পারভীন। পরে তাকে হত্যা করে কানাডায় চলে যান পারভীন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহা বলেন, আরিফুলকে হত্যার পর পারভীন কানাডায় ফিরে গেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারভীন দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকে আরিফুলকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় নিহতের বোন সাফরিয়া আক্তার রেলি বাদী হয়ে ভাটারা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় পারভীনসহ নাজমুল নামে আরেকজনকে আসামি করেছেন।

সর্বশেষ খবর