সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু

ফ্যানে ঝুলিয়ে মারধরের অভিযোগ সন্তানের

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরের অভয়নগরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় আফরোজা বেগম (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসার জন্য অভয়নগর থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহতের ছেলে আরিফ হোসেন মুন্নার অভিযোগ- স্থানীয় একটি মহলের ইন্ধনে নিজেদের কাছে থাকা ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে পুলিশ তার মাকে গ্রেফতার করে। পরে ফ্যানে ঝুলিয়ে মারধর করে। যদিও নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে পুলিশ দাবি করেছে, মাদকসহ আটক ওই নারী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আফরোজা বেগম অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার জলিল মোল্যার স্ত্রী। তার ছেলে আরিফ হোসেন মুন্না বলেন, অভয়নগর থানার এসআই শিলন ও শামছু শনিবার মধ্যরাতে তাদের বাড়িতে যান। পরে কয়েক মহিলা পুলিশ ডাকা হয়। নিজেদের কাছে থাকা ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে পুলিশ তার মাকে গ্রেফতার করে। এরপর তারা তার মাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারধর করে। পরে রাত ১টার দিকে থানায় নিয়ে যায়। মুন্না বলেন, গতকাল সকালে থানায় গিয়ে তার মাকে খুবই অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পান। পুলিশকে অনুরোধ করে তার মাকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা কয়েকটি টেস্ট দিলেও সেগুলো না করেই পুলিশ সদস্যরা তার মাকে ফের থানায় নিয়ে যায়। সেখানে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার আবদুস সামাদ বলেন, ওই নারীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। ময়নাতদন্ত ছাড়া তার মৃত্যুর কারণ বলা যাবে না বলে তিনি জানান। আফরোজা বেগমের স্বামী জলিল মোল্যা বলেন, ঘরে কিছু জমানো টাকা ও ইজিবাইক বিক্রির টাকাসহ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা পুলিশ নিয়ে গেছে। আরও ২ লাখ টাকার দাবিতে তার স্ত্রীকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। আফরোজার লাশ হাসপাতালে থাকার সময় সেখানে পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা কেউ মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। পরে অভয়নগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাত দেড়টার দিকে মাদকসহ ওই নারীকে আটক করা হয়। তাকে কোনো প্রকার নির্যাতন করা হয়নি। সকালে তিনি অসুস্থ বোধ করলে স্বজনদের উপস্থিতিতেই তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। রক্তচাপ বাড়ায় ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় সেখান থেকে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পথেই তিনি মারা যান। পুলিশের কোনো সদস্য ওই নারীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেননি।

সর্বশেষ খবর