মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সন্তান হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তানভীরের মা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

নিখোঁজের ৪৪ ঘণ্টা পর ট্রেন থেকে পড়ে নিখোঁজ হওয়া সোহেল তানভীরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (২ জুন) বাদ মাগরিব জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। এর আগে দুপুর ২টার দিকে নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে ভাসমান লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় জেলেরা। লাশ তানভীরের বলে শনাক্ত করে পুলিশ।

মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে বাবা ও খালু আখাউড়ার নয়াদিল গ্রামের আবদুল কাইয়ুম স্বপনের সঙ্গে ঢাকায় যান তানভীর। ফ্লাইট ছিল শুক্রবার ভোর ৪টায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে জানতে পারেন, ফ্লাইট বাতিল করে নতুন তারিখ দেওয়া হয়েছে ৭ জুন। বাধ্য হয়ে শুক্রবার বিকালে আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলসেতু অতিক্রমের সময় ট্রেনের দরজা থেকে মেঘনা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। সোহেল তানভীর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দেবগ্রাম মেরাজ মিয়া মোল্লার ছেলে। তার বয়স ১৭ বছর। কিন্তু পাসপোর্ট বয়স ২২ বছর দেখানো হয়েছে। তানভীর বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। আখাউড়ার দেবগ্রাম গ্রামে সরজমিনে দেখা গেছে, সবার মুখে মুখে তানভীরের আলোচনা। তার বাড়িতে ঢুকে নীরবতা দেখা গেছে। বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকেন সোহেলের বাবা-মা। ঘরে ঢুকে বসতেই সোহেলের মা শারমিন আক্তার এগিয়ে আসেন। একপর্যায়ে কান্নারত অবস্থায় ছেলেকে এনে দিতে মিনতি করেন। সে সময় সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মূর্ছা যান। স্বজনরা তাকে সেখান থেকে তুলে ভিতরের কক্ষে নিয়ে যান। তানভিরের মামা ইমরান হোসেন বলেন, মালয়েশিয়ার ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ফেরার পথে ট্রেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব অতিক্রম করার পর আসন থেকে উঠে যায় সোহেল। কারণ জানতে চেয়েছিল তার খালু। টয়লেটে যাবে বলে খালুকে জানিয়েছিল তানভীর। বগির দরজায় গিয়ে দাঁড়ায় সে। দরজায় বসে ছিল। ট্রেনে নাকি তখন অনেক ভিড় ছিল। কিন্তু ভৈরব রেলওয়ে সেতুতে থাকা অবস্থায় ট্রেনের লোকজন বলাবলি শুরু করে ট্রেন থেকে কেউ পড়ে গেছে। পরে তানভীরকে না পেয়ে দুই ভগ্নিপতি আশুগঞ্জে নেমে নৌকায় করে ভৈরবে যান। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ভাগিনার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর