শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বরাদ্দ কমল বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছিল ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা, যা ছিল মোট বাজেটের ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। সেই হিসাবে বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরে এই খাতে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বরাদ্দ কমেছে। আর্থিক হিসেবে কমেছে ৪ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। যদিও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ কমিয়ে ২৮ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা করা হয়। বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট বিবেচনায় আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ বেড়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। গতকাল জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন। প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ২৯ হাজার ২৩০ কোটি টাকা এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতে ১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে পরিচালন ব্যয় ৫৩ কোটি ও উন্নয়ন ব্যয় ২৯ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতে পরিচালন ব্যয় ৮৯ কোটি ও উন্নয়ন ব্যয় ৯৯৮ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়ন বরাদ্দ ২ হাজার ৫০ কোটি টাকা বাড়লেও জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতে ৬৫ কোটি টাকা কমেছে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানান, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এরই মধ্যে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট, যা বর্তমানে ৩০ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াটে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন ও ব্যবহার বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করেন তিনি।

জ্বালানি খাতে অগ্রগতির কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আমাদের গ্যাসের উৎপাদন ছিল দৈনিক ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি দৈনিক প্রায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট আমদানিকৃত এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১৪ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে অনশোর এলাকায় তেল/গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য ৪৮টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার করার পরিকল্পনা রয়েছে। সামুদ্রিক খনিজ ও অন্যান্য সম্পদের আহরণ এবং এর সুষ্ঠু ব্যবহারের গুরুত্ব বিবেচনায় সুনীল অর্থনীতি খাতে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

সর্বশেষ খবর