রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

কেমন হবে মোদির সরকার

♦ তৃতীয় মেয়াদে আজ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ ♦ রাহুল বিরোধী দলের নেতা মনোনীত ♦ অংশ নিতে নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনা ♦ কাল মোদির সঙ্গে বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

কেমন হবে মোদির সরকার

লোকসভা নির্বাচনে জিতে নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। তবে তাঁর দল বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনে জোটের সদস্যদের দিতে হচ্ছে বেশ কিছু মন্ত্রণালয়। গতকাল বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ)-এর বৈঠকে নতুন মন্ত্রিসভার বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। আজ সন্ধ্যা ৭টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেবেন।

শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। অনুষ্ঠানে থাকবেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরাও। কাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন। কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহরুর পর নরেন্দ্র মোদিই হবেন প্রথম তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, নরেন্দ্র মোদির নতুন মন্ত্রিসভায় চারটি মন্ত্রণালয় পেতে যাচ্ছে চন্দ্রবাবু নাইডুর দল টিডিপি। নির্বাচনে তারা জিতেছে ১৬ আসনে। আর ১২ আসন জেতা নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) পাচ্ছে দুটি মন্ত্রণালয়। খবরে বলা হয়েছে, টিডিপি থেকে মোদির মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে যাওয়া সম্ভাব্য চার নেতার মধ্যে তিনজন হলেন রামমোহন নাইডু, হরিশ বালযোগী এবং দগ্গুমালা প্রসাদ। আর নীতীশ কুমারের দল থেকে সম্ভাব্য মন্ত্রী হিসেবে দুজন জ্যেষ্ঠ নেতার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। তাঁরা হলেন লালন সিং ও রামনাথ ঠাকুর। সূত্র বলছেন, অন্ধ্র প্রদেশে ১৬ লোকসভা আসনে জয়ী হওয়ার পর টিডিপি চারটি মন্ত্রণালয় এবং সংসদীয় স্পিকারের পদ দাবি করেছিল। আর ১২ আসনে জেতা জেডিইউ চেয়েছিল দুটি মন্ত্রিপদ।

রাহুল লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা মনোনীত : ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় গতকাল দলের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীকে সর্বসম্মতভাবে লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা মনোনয়ন করা হয়েছে। এ নিয়ে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্য শরিকদের সঙ্গে আলোচনা হবে। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শেষে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি ভেনুগোপাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, লোকসভায় রাহুল গান্ধীকে বিরোধী নেতা করা-সংক্রান্ত প্রস্তাব সব অংশগ্রহণকারী সর্বসম্মতভাবে পাস করছেন। রাহুল বলেছেন, সংসদে বিরোধী নেতা হওয়ার প্রস্তাবটি তিনি ভেবে দেখবেন। লোকসভা ২০১৪ সাল থেকে বিরোধীদলীয় নেতাশূন্য ছিল। কারণ, লোকসভায় বিরোধী নেতা হওয়ার জন্য কোনো একক দলকে মোট ৫৪৩ আসনের অন্তত ১০ শতাংশ পেতে হয়। কিন্তু গত দুই লোকসভার নির্বাচনে কংগ্রেস বা অন্য কোনো দল তা পূরণ করতে পারেনি। এবার কংগ্রেস ৯৯টি আসন পাওয়ায় সেই খরা দূর হতে পারে।

নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে গতকাল দুপুরে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন তিনি। সেখানে তাঁকে দেওয়া হয়েছে উষ্ণ অভ্যর্থনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও এ অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু, সিসিলিশের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আফিফ, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জুগনাথ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার দহল ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী থেসেরিং তোবগে। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইট ভিভিআইপি বিমানবন্দর পালাম এয়ার ফোর্স স্টেশনে অবতরণ করে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের সচিব (সিপিভি ও ওআইএ) মুকতেশ পরদেশি, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান অভ্যর্থনা জানান। নয়াদিল্লিতে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা আজ সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদানের পর নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। পরে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে যোগ দেবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ ছাড়া নয়াদিল্লিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তিনি ভারত ত্যাগ করতে আগামীকাল সোমবার বিকাল ৫টায় (নয়াদিল্লি সময়) পালাম এয়ার ফোর্স বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন। ভারতের রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবনে প্রধানমন্ত্রী মোদির তৃতীয় মেয়াদের শপথ অনুষ্ঠানে ৮ হাজারের বেশি অতিথির জন্য আয়োজনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা-মোদি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক কাল : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে কাল সোমবার দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে। এ বৈঠকে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর হবে না। তবে দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আলোচনায় উঠতে পারে।

সর্বশেষ খবর