সোমবার, ১০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভিএফএসের সামনে ইতালি গমনেচ্ছুদের অনশন পণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রায় ২০ হাজার ভিসাপ্রত্যাশীর পাসপোর্ট আটকে আছে বাংলাদেশের ইতালিয়ান দূতাবাসে। পাসপোর্ট ফেরতের দাবিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভিসা ফেসিলিটেশন সার্ভিস-ভিএফএস গ্লোবাল’-এর সামনে গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করে ইতালির ভিসাপ্রত্যাশী বাংলাদেশিরা। কর্মসূচি সফল করতে গতকাল সকাল থেকেই কয়েক শ বাংলাদেশি রাজধানীর গুলশানে ভিএফএস অফিসের কাছে জড়ো হতে থাকেন। পরে পুলিশের বাধায় প- হয়ে যায় ভিসা প্রার্থীদের গণঅনশন কর্মসূচি। এ অনশন কর্মসূচি ঘিরে গুলশানে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়, মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার সকালে ভিএফএস গ্লোবালের অফিসের সামনে গণঅনশনের উদ্দেশে ইতালি গমনেচ্ছু কর্মীরা গুলশান লেকপাড়ে জমায়েত হতে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভিএফএস গ্লোবালের অফিসের সামনে গিয়ে গণঅনশন কর্মসূটি পালন করা। তবে পুলিশি বাধায় কর্মসূচি পালন করতে পারেননি তারা। পুলিশের পক্ষ থেকে কর্মীদের জানানো হয়, কর্মীরা ভিএফএস গ্লোবালের অফিসের সামনে গিয়ে গণঅনশন করতে পারবেন না। একপর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে চারজনের একটি প্রতিনিধি দলকে গুলশান থানায় যেতে বলা হয়। তারা থানায় গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

থানা থেকে বের হয়ে আবদুল কাইয়ুম নামের একজন জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নেবেন। ভিসাপ্রত্যাশীদের সহযোগিতা করা হবে। মূলত ভিসাপ্রত্যাশীরা ঢাকা সিলেট এবং চট্টগ্রামে ভিএফএসের এপয়েনমেন্টের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দেন। জানা গেছে, পাঁচ কারণে ভিসা দিতে দেরি হচ্ছে। জমা দেওয়া পাঁচটি নুলাস্তার মধ্যে একটি সঠিক নয়। যা যাচাই-বাছাই করতে সময় দরকার। গত বছর জুলাইয়ের পর আবেদনের সংখ্যাটা এতটাই বাড়ে যে প্রতিষ্ঠানটির লোকবল এটি সামাল দিতে পারছেন না। মধ্যস্বত্বভোগীরা বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে মিথ্যা স্বপ্ন দেখান প্রবাসীদের। কাজের ভিসা ছাড়াও অন্যান্য ভিসার চাপও বেড়েছে। বর্তমানে ইতালি যাওয়ার জন্য মূল পাসপোর্ট জমা রাখতে হয় না।

সিলেট থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, ‘ভিসা ফেসিলিটেশন সার্ভিস-ভিএফএস গ্লোবাল’- এর হয়রানি বন্ধ ও পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে রবিবার সিলেটে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক শ ভুক্তভোগী। বেলা ১১টা থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেক তারা নগরীর মির্জাজাঙ্গালস্থ ভিএফএস গ্লোবাল সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘ইতালির ভিসার জন্য আমরা ভিএফএসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ পাসপোর্ট জমা দেই। কিন্তু মাসের পর মাস এমনকি অনেকের পাসপোর্ট এক বছরের চেয়ে বেশি সময় ধরে ভিএফএসে আটকে রাখা হয়েছে। আবেদন করার পরও পাসপোর্ট ফেরত দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। নুলস্তা (ওয়ার্ক পারমিট) সঠিক থাকার পরও সঠিক সময়ে ভিসা কিংবা পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। গণ অবস্থানকালে বক্তারা আরও বলেন, ‘জীবন-জীবিকার তাগিদে আমরা ইতালি যাওয়ার জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করে আজ পথের ভিখারি হয়েছি। নিঃস্ব হয়ে আমরা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। অনিশ্চিত জীবনযাপন করছি। কিন্তু ভিএফএস আমাদের নিয়ে মশকরা করছে।’ আন্দোলনকারীরা আরও জানান, ২২ হাজারের অধিক ভুক্তভোগীর পাসপোর্ট ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম ভিএফএস সেন্টারে আটকা আছে। প্রতিদিন প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ পাসপোর্ট জমা নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ; কিন্তু তাদের অফিসে জনবল সংকটের অজুহাত দেখিয়ে তারা প্রসেস করছে না। পাসপোর্টও ফিরত দিচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর