মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সহজ লক্ষ্যেই পৌঁছতে পারলেন না শান্তরা

আসিফ ইকবাল

ফের ‘দ্য সেভিয়ার বা ত্রাণকর্তা’ হতে পারলেন না মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ভাগ্য সহায় হলো না। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঐতিহাসিক ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১১ রান। এক পর্যায়ে শেষ দুই বলের সমীকরণ দাঁড়ায় ৬ রান। একটি ছক্কা হলেই হয়! ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতানোর বহু রেকর্ডস রয়েছে মাহমুদুল্লাহর। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ডালাসে পাহাড়সমান চাপ সামাল দেন ছক্কা মেরে। গতকাল কেশব মহারাজের ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলটি ছিল ফুলটস। মাহমুদুল্লাহ স্ট্রেট ড্রাইভে উড়িয়ে মারেন। বল যখন আকাশে, নাসাউ স্টেডিয়ামে উপস্থিত ২০ হাজার লাল-সবুজের সমর্থক তখন উঠে দাঁড়িয়েছেন জয়োৎসব করতে। কিন্তু না! বল সীমানা ছাড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে অবিশ্বাস্য দক্ষতায় বলটি তালুবন্দি করেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। আউট হয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকেন মাহমুদুল্লাহ। বিশ্বাসই করতে পারেননি। আউট হয়ে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন বেশ কিছুটা সময়। এরপর শেষ বলে দরকার ৬ রান। তাসকিন এক রানের বেশি নিতে পারেননি। জিততে জিততে বাংলাদেশ হেরে যায় ৪ রানে। টানা তিন জয়ে সবার আগে টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার এইট নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। নাজমুল বাহিনীর পরের ম্যাচ ১৩ জুন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেন্ট ভিনসেন্টে। ম্যাচটি যেন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পুনরাবৃত্তি হলো!

আফ্রিকার ছুড়ে দেওয়া ১১৪ রানের টার্গেটে ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন কোণঠাসা টাইগাররা, তখন হাল ধরেন তৌহিদ হৃদয় ও মাহমুদুল্লাহ। দুজনে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ৪৪ রান যোগ করে জয়ের স্বপ্ন দেখান। তৌহিদ ৩৪ বলে ৩৭ রানে রাবাদার বলে লেগবিফোর হতেই ম্যাচ হেলে পড়ে প্রোটিয়াদের দিকে। যদিও মাহমুদুল্লাহ ছিলেন। কিন্তু হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১০৯ রান করে বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ ২০ রান করেন ২৭ বলে ২ চারে। পুনরায় ব্যর্থ সাকিব। ৪ বলে ৩ রান করেন। ব্যর্থ ওপেনিং জুটিও। তানজিদ ৯ বলে ৯ রান, নাজমুল ২৩ বলে ১৪ রান করেন।

সুপার এইটে খেলতে জয়ের বিকল্প ছিল না টাইগারদের। আফ্রিকাকে হারালেই প্রায় নিশ্চিত। এমন সমীকরণের ম্যাচে গতকাল এক পরিবর্তন নিয়ে খেলে টাইগাররা। ক্যারিয়ারে ১৩ বার শূন্য রান করা সৌম্য সরকারকে সাজঘরে বসিয়ে রাখে। পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পান জাকের আলি। টি-২০ বিশ্বকাপে এই প্রথম খেলছেন জাকের। নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল টস হেরে ফিল্ডিং করে বাংলাদেশ। সাকিব ছাড়া টাইগার বোলাররা দারুণ বোলিং করেন। বিশেষ করে দুই পেসার তানজিম ও তাসকিন দুরন্ত বোলিং করেন। টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের চেয়েও মার্করামবাহিনীকে লড়তে হয়েছে ‘ড্রপ-ইন’ উইকেটের সঙ্গে। টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৩ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলটি ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপদে পড়ে যায়। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ২৫ রান তুলতে হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। সেই ধাক্কা সামলে নেন ডেভিড মিলার ও হেনরিক ক্লাসেন। উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে দুজনে ধীরলয়ে ব্যাটিং করেন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৭৯ বলে ৭৯ রান যোগ করেন। ক্লাসেন-মিলার জুটি যতক্ষণ ব্যাটিংয়ে ছিলেন, মনে হচ্ছিল দেড়শ পেরোবে অনায়াসে। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে তানজিম ও তাসকিন বোলিংয়ে এসে দুজনকে সাজঘরে ফেরান। ক্লাসেন ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৬ রান করে তাসকিনের বলে বোল্ড হন। মিলার ২৯ রান করে বোল্ড হন রিশাদের বলে।

সর্বশেষ খবর