শিরোনাম
বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

অবশেষে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস গাজায়

প্রতিদিন ডেস্ক

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অবশেষে পাস হয়েছে। সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ সদস্যই এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। শুধু রাশিয়া ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতে প্রস্তাবটি পাস হয়। ইসরায়েল ও হামাসকে এ প্রস্তাব মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব উভয় পক্ষের জন্যই নতুন সুযোগ। এরই মধ্যে যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে ব্যাপারে তারা মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছুক। এদিকে, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে গাজায় চলমান সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি রাউত শাপির বেন-নাফতালি সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বলেন, গাজা যেন আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হতে পারে সেটি তার দেশ নিশ্চিত করতে চায়। তেল আবিবের জ্যেষ্ঠ এ কূটনীতিক বলেছেন, হামাসের কাছে থাকা সব বন্দি ফেরত না আসা পর্যন্ত এবং হামাসের (লড়াইয়ের) সামর্থ্য পুরোপুরি ধ্বংস হওয়ার আগপর্যন্ত এ যুদ্ধ শেষ হবে না। তার অভিযোগ, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠীটি যুদ্ধবিরতি নিয়ে ‘সুদীর্ঘ আলোচনার’ সুযোগ নিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা গ্রহণের পর এমন প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরায়েল। এদিকে পাস হওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী, শান্তি পরিকল্পনাটি তিন ধাপে বাস্তবায়িত হবে। যেখানে হামাসের হাতে থাকা সব ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির ব্যাপারেও শর্ত দেওয়া হয়েছে। বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং গাজা থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করতে হবে ইসরায়েলকে। গত ৩১ মে প্রথম এ প্রস্তাব জনসম্মুখে আনেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নিরাপত্তা পরিষদে এটি ব্যাপকভাবে অনুমোদন লাভের অর্থ দাঁড়াচ্ছে, এখন বিশ্বের অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদও সংঘাত বন্ধে ইসরায়েল ও হামাসের ওপর আরও চাপ দিতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন। শুরুতেই তিনি যান ইসরায়েল। সেখানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন। নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে প্রস্তাবিত চুক্তিকে সমর্থন দেবেন বলে ব্লিঙ্কেনকে আশ্বস্ত করেছিলেন।

ব্লিঙ্কেন জানান, ইসরায়েলি নেতার কাছ থেকে তিনি এ চুক্তির বিষয়ে ‘স্পষ্ট আশ্বাস’ পেয়েছেন। হামাস এতে রাজি হলে তখন ইসরায়েল এটিকে গ্রহণ করবে। এর আগে নেতানিয়াহু বারবার জনসম্মুখে বলেছেন, গাজায় সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং হামাসকে ধ্বংস করা ও সব বন্দিকে মুক্ত করার আগপর্যন্ত তা চলবে।

এদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে হামাস। হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হামাস যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তিনি বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে চলে কি না তা অনেকটাই ওয়াশিংটনের ওপর নির্ভর করে। জাতিসংঘে আনা প্রস্তাবটিতে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, ইসরায়েল এতে সম্মতি দিয়েছে। কিন্তু, জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি বা খোদ বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জনসম্মুখে দেওয়া বক্তব্যেও এ পর্যন্ত তার কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। বরং এখনো পর্যন্ত তেল আবিবের পক্ষ থেকে এটি না মানারই সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর