শিরোনাম
শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

হবে ডজন চুক্তি-সমঝোতা

প্রধানমন্ত্রী দিল্লি যাচ্ছেন আজ, কাল মোদির সঙ্গে বৈঠক

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

হবে ডজন চুক্তি-সমঝোতা

দুই দিনের সফরে আজ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের ক্ষমতায় আসা নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে এই দ্বিপক্ষীয় সফরে যাচ্ছেন তিনি। বাংলাদেশে টানা চতুর্থ মেয়াদের ক্ষমতায় আসার পর ভারতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এটাই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। অবশ্য চলতি মাসে মোদির শপথ গ্রহণ উপলক্ষে এক দফায় দিল্লি সফর করেছেন তিনি। কিন্তু টানা ক্ষমতায় থাকা প্রতিবেশী দুই দেশের শীর্ষ নেতার আনুষ্ঠানিক আলোচনা হবে এবার। ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রের খবর, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে মূলত রাজনৈতিক ঐকমত্যের অঙ্গীকার পুনরায় ঘোষিত হবে। উপমহাদেশে চীনের ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে এই অঙ্গীকারকে বিশেষ মাত্রায় দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি এই সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একডজনের বেশি নতুন ও পুরাতন সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষর ও নবায়ন হবে। সফরসূচি অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে আজ শুক্রবার দুপুর ২টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন। বিকালে শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।

আগামীকাল শনিবার সকালে শেখ হাসিনাকে নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এরপর তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন। পরে তিনি যাবেন ভারতের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দরাবাদ হাউসে। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আগে হবে দুই নেতার একান্ত বৈঠক। পরে দুই দেশের প্রতিনিধিদের আলোচনার পর দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক-চুক্তি স্বাক্ষর ও নবায়নের পর তা বিনিময় করবেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। এরপর আনুষ্ঠানিক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিবেন দুই শীর্ষ নেতা। হায়দরাবাদ হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তাঁর সচিবালয়ে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে বিকালে আবারও যাবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা। সফর শেষে আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকার উদ্দেশে দিল্লি ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী। সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, সফরের সময় সীমিত হলেও রাষ্ট্রীয় সফরে সবগুলো উপাদান এখানে থাকবে। তিনি বলেন, ভারতের নতুন সরকার রাষ্ট্রীয় দ্বিপক্ষীয় সফর বাংলাদেশ দিয়ে শুরু করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। এর মাধ্যমে ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির বাহ্যিক প্রকাশ এখানে দেখা যাচ্ছে। সে বিবেচনায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে সোনালি অধ্যায়ের কথা বারবার বলা হয়ে থাকে, সেটির প্রমাণ আবার পেলাম। তিনি বলেন, ভারত যথেষ্ট আন্তরিক বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে। বাংলাদেশের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে বা আমরা গুরুত্ব দেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে, যার কারণে অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো আমন্ত্রণ আমরা সাদরে গ্রহণ করেছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বৈঠকে বেশি গুরুত্ব পাবে নিরাপত্তার বিষয়টি। মিয়ানমার পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সংকট, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য মনিপুরে সংকট, এ অঞ্চলে চীনের প্রভাবসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া শীর্ষ বৈঠকে গুরুত্ব পাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য, জ্বালানি, নতুন প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে শীর্ষ বৈঠকে আলোচনা হবে। এ ছাড়া মহাকাশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল অর্থনীতির মতো বিষয়গুলো সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও ঋণ সহায়তার মতো অমীমাংসিত বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। ভারতের ঋণচুক্তি বাস্তবায়নে নতুন রূপরেখা চুক্তি বা বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সমঝোতা স্মারক সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর