শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

পুলিশ কর্মকর্তার মা-বাবা খুন

রাজধানীতে বাসায় ঢুকে কোপাল, ভবনজুড়ে রক্তের ছাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশ কর্মকর্তার মা-বাবা খুন

রাজধানীতে নিজ বাড়িতে খুন হয়েছেন পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টরের (এসআই) মা-বাবা। তাদেরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়ার পশ্চিম মোমেনবাগের বটতলায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। গতকাল সকালে পুলিশের এসআই আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে ইমনের পিতা শফিকুর রহমান (৬২) ও মা ফরিদা ইয়াসমিন (৫৫)-এর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যার কারণ উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। গতকাল এসব তথ্য জানান যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান। তিনি বলেন, ঘটনাটি বুধবার রাতে ঘটতে পারে। লোকজন তাদের লাশ দেখতে পেয়ে ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। দুজনেরই মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। ফরিদার লাশ পাওয়া গেছে দোতলার ফ্ল্যাটে আর তার স্বামী শফিকুরের লাশ পাওয়া গেছে নিচতলার পার্কিংয়ে। তার কাছে বাসার প্রধান ফটকের চাবি পাওয়া গেছে। ফরিদার গায়ে স্বর্ণালংকার থাকলেও খুনিরা তা নেয়নি। আর বাসা থেকে কিছু খোয়া গেছে কি না, সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে আলমারিও খোলা পাওয়া গেছে। বাসার নিচের প্রধান ফটক ও ঘরের দোতলার দরজা খোলা ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভোরে শফিকুর নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় প্রথমে তার ওপর হামলা চালানো হয়। পরে দোতলায় উঠে তার স্ত্রীকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ জানায়, শফিকুর-ফরিদা দম্পতি নিজেদের চার তলা বাড়ির দোতলায় থাকতেন। ওপরের দুই তলা এবং নিচতলার একপাশে ভাড়াটিয়ারা থাকেন। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ওই দম্পতির ছেলে এসআই আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে ইমন পুলিশের স্পেশাল ব্র্যাঞ্চ (এসবি) সদর দফতরে কর্মরত। ইমন ও তার স্ত্রী ওই বাসায়ই থাকেন। তবে বুধবার রাতে ইমন তার দাদাবাড়ি ফেনী এবং তার স্ত্রী নিজের বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। ঘটনাস্থল থেকে আলামত জব্দ করেছে সিআইডি। ওই এলাকায় সিসি ক্যামেরা বেশি নেই। খুনিদের চিহ্নিতের চেষ্টা চলছে। চার তলা ওই বাড়ির ভাড়াটিয়ারা দাবি করেছেন, তারা কেউ বিষয়টি টের পায়নি। কী কারণে এই হত্যাকান্ড, কে বা কারা এতে জড়িত তা এখনো জানা যায়নি। এটি পূর্বের বিরোধ না ডাকাতির ঘটনা সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে। ব্যক্তিগত জীবনে এসআইর পিতা শফিকুর রহমান পেশাগতভাবে জনতা ব্যাংকের সাবেক গাড়িচালক ছিলেন ও তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন (ছিলেন গৃহিণী। ডিএমপির ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) নাহিদ ফেরদৌস বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, এটি পরিকল্পতি হত্যাকান্ড। পূর্বের কোনো বিরোধের জের ধরে এটি ঘটে থাকতে পারে। অপর দিকে ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, এটি ডাকাতির ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর