শিরোনাম
শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, গত ১৫ বছরে নতুন করে ২৫ হাজার ৭৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ৩০ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট। এ যাবৎকালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে গত ৩০ এপ্রিল। দেশে চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ থাকলেও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে পরিপূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এ কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। গতকাল জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সোহরাব হোসেনের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান। সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি ৩৫ হাজার কোটি : সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে শুধু বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ ভর্তুকির পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩১ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা ইতোমধ্যে নগদ ও বন্ডের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া এলএনজি আমদানির ব্যয় মেটাতে গ্যাস খাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গ্যাস খাতে আরও ১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির প্রয়োজন হবে। তবে সরকার চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে এ খাতে কোনো ভর্তুকি দিতে হচ্ছে না।

চাহিদার তুলনায় গ্যাস ঘাটতি ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট : নতুন অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ না পাওয়া নিয়ে চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ জানান, বর্তমানে দেশে দৈনিক প্রায় ৩৮০০ থেকে ৪০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। দেশীয় উৎপাদন ও এলএনজি আমদানি করে সরবরাহ করা হচ্ছে ৩০০০-৩১০০ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি থাকায় শুধু পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চলে এবং বিদ্যুৎ ও সার খাতে অগ্রাধিকার বিবেচনায় গ্যাস সংযোগ চালু আছে।

ছয় বছরে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ১০ গুণ বাড়ানোর লক্ষ্য : ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় ১০ গুণ বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ জানান, বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ১৩১২ দশমিক ৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি খাতে ১২৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ১২ হাজার ৫৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ২০৩০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩৯ হাজার ৩২৪ মেগাওয়াট ও ২০৪১ সালের মধ্যে ৭৪ হাজার ২৫৩ মেগাওয়াটে উন্নীত করার কার্যক্রম বাস্তবায়নাধীন আছে।

২০২৮ সালের মধ্যে দেড় শ গ্যাসকূপ খননের উদ্যোগ : গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি ও পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে আরও ৮০-১০০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার (সংস্কার) করা হবে বলে জানান খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গ্যাস সংকট নিয়ে ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি বিভিন্ন ধরনের কূপ খনন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। মন্ত্রী আরও জানান, দেশে এ যাবৎকালে মোট ২৯টি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বর্তমানে ২০টি গ্যাসক্ষেত্র উৎপাদনরত, ৫টি পরিত্যক্ত এবং ৪টি গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যা থেকে ভবিষ্যতে গ্যাস উত্তোলন করা হবে।

সর্বশেষ খবর