সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

হাজির হননি দুদকে বেনজীরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাজির হননি দুদকে বেনজীরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা

দ্বিতীয় দফার তলবেও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হননি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতি ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে অভিযোগের বিষয়ে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন তিনি। দুদক জানিয়েছে, নোটিশ পেয়ে কমিশনে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য না দিলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে অনুসন্ধান টিম। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গতকাল দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, বেনজীর আহমেদ আইনজীবীর মাধ্যমে গত ২১ জুন দুদক চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। এবারের চিঠিতে নতুন করে সময়ের আবেদন করেননি। লিখিত বক্তব্যে তার অভিযোগগুলোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি আরও বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার বক্তব্য দেওয়ার জন্য আজ ২৩ জুন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তিনি উপস্থিত হবেন কি না, সে বিষয়ে আমাদের কিছু জানাননি। তিনি আরও জানান, দুদকের অনুসন্ধানী টিম নোটিশ অনুযায়ী আজ (সোমবার) তার স্ত্রী ও কন্যাদের উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে। তারাও যদি উপস্থিত না হন তাহলে তাদের বিষয়েও অনুসন্ধান টিম আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। নোটিশ পেয়ে অফিস সময়ের মধ্যে কমিশনে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য না দিলে অনুসন্ধান টিম আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ সপরিবারে বিদেশে রয়েছেন। এর আগে গত ৬ জুন বেনজীর আহমেদকে ও ৯ জুন স্ত্রী জীশান মীর্জা এবং দুই কন্যা ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে তলব করা হয়েছিল। প্রথম দফা তলবে নোটিশে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে তারা সময়ের আবেদন করেছিলেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ যাচাইবাছাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ অনুসন্ধান টিম অভিযোগটি অনুসন্ধান শুরু করে। টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক নিয়ামুল আহসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন। এরপর দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ মে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় আদালত। এ ছাড়া গত ২৬ মে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামের ১১৯টি জমির দলিল, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও গুলশানে চারটি ফ্লাট জব্দের আরেকটি আদেশ দেয় আদালত। আদেশবলে তদীয় ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমিসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৩টি হিসাব জব্দ ও অবরুদ্ধ করা হয়। আদালতের আদেশে সব মিলিয়ে ৬২৭ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়েছে। বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের তত্ত্বাবধানে সরকারি রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে। এরই ধারবাহিকতায় রিসোর্টের পুকুর থেকে গভীর রাতে চুরি করে বিক্রির সময় ৬০০ কেজি মাছ হাতেনাতে জব্দ করা হয়। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের স্থাবর সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ কার্যকর ও চলমান রয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর