সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

প্রতিহিংসার শিকার খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিহিংসার শিকার খালেদা জিয়া

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর একেবারে সন্ধিক্ষণে। তিনি (খালেদা জিয়া) ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের চরম প্রতিহিংসার শিকার। মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে হত্যা এবং রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশে কোনো রকম চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে তাকে। বিনা চিকিৎসায় আজকে তিনি মৃত্যু শয্যায়।

গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ফখরুল অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশ পাঠানোর দাবি জানিয়ে বলেন, মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশের কোনো অ্যাডভান্স হেলথ সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে দীর্ঘকাল আটক করে রাখা হয়েছে। এখন তাকে বাসায় থাকার সুযোগ দেওয়া হলেও তিনি পুরোপুরি অবরুদ্ধ এবং গৃহবন্দি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবরুদ্ধ অবস্থায় কারাগারে থেকে তিনি অসুস্থ হয়েছেন। তাঁর কোনো চিকিৎসা হয়নি। পরবর্তীকালে তাঁকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে- সেখানেও তাঁর কোনো সুচিকিৎসা হয়নি।

সরকার ভারতের সেবাদাস : বর্তমান সরকার ভারতের সেবাদাসে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা সবার আগে তিস্তার পানির ন্যায্য বণ্টন চাই এবং অভিন্ন যেসমস্ত নদীগুলো আছে প্রত্যেকটি নদীর আমরা ন্যায্য হিৎসা চাই। এটা আমাদের অধিকার, আন্তর্জাতিক আইনের অধিকার। এ কথাগুলো সরকার বলতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে ১০টি চুক্তি করেছেন। কিন্তু আমরা যে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিৎসা পাচ্ছি না, সেই ব্যাপারে কোনো চুক্তি হয়নি। উপরন্তু তিস্তা প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করার জন্য, তাতে বিনিয়োগ করার জন্য ভারত প্রস্তাব করেছে। তিনি আরও বলেন, আশপাশের সব প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে তারা আজকে পুরোপুরি মাথা নিচু করে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে। মিয়ানমার থেকে গুলি আসে জবাবটাও পর্যন্ত তারা দিতে পারে না। এই একটা অথর্ব নতজানু শাসকগোষ্ঠী আমাদের ওপর চেপে বসে আছে। মির্জা ফখরুল বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সাবেক আইজিপিসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার দুর্নীতির কাহিনি বেরিয়েছে। এ অবস্থায় গত শুক্রবার পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন থেকে সাংবাদিকদের সত্য প্রকাশে হুমকি দিয়ে একটা স্টেটমেন্ট দেওয়া হয়েছে।

বলা হয়েছে যে, এই সত্য (পুলিশের দুর্নীতির খবর) প্রকাশ করা যাবে না। কারণ এতে নাকি তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়। অথচ আজকে সারা দেশের মানুষ জানে, সারা পৃথিবী জানে যে, পুলিশ বাহিনীর কিছু কিছু সদস্য কীভাবে এই অবৈধ সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিত্ত-বৈভবের একটা দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর