বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

অনেক প্রশ্নের অবিশ্বাস্য হার

রাশেদুর রহমান

অনেক প্রশ্নের অবিশ্বাস্য হার

ভারতের কাছে অস্ট্রেলিয়ার পরাজয় দারুণ এক সুযোগ এনে দিয়েছিল বাংলাদেশের সামনে। বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ। কত হিসাব নিকেশ করা হলো। পত্রিকার পাতায় সেসব জটিল হিসেব বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই ছাপা হয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও কষে কষে নানা রকমের হিসেব বের করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেন। কিন্তু এত এত হিসেব কোনো কাজে এলো না। কাক্সিক্ষত জয়েরই দেখা মেলেনি। গতকাল সেন্ট ভিনসেন্টের আরনস ভেল স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের কাছে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৮ রানে হেরে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। যে পরাজয়ে শেষ হয়ে গেছে সব হিসেব। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে আফগানরা। কাল সকালে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান।

বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্যটা খুব বড় ছিল না। আফগান ব্যাটারদের ১১৫ রানেই আটকে দেন রিশাদ, তাসকিন, মুস্তাফিজরা। বার বার বৃষ্টি এসে বাধা দেয় বাংলাদেশ ইনিংসে। ১১.৪ ওভার পর বৃষ্টি এলে এক ওভার কমে যায়। ১৯ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১৪। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন এ লক্ষ্যে পৌঁছতেও ব্যর্থ হয়। ১৭.৫ ওভারে ১০৫ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। লিটন দাস ৪৯ বলে ৫৪ রান করে এক পাশ আগলে রেখেছিলেন। বাকিরা একে একে সাজ ঘরে ফেরেন। তানজিদ হাসান ৩ বলে শূন্য (০) রানেই ফজলহক ফারুকির শিকারে পরিণত হন। অধিনায়ক শান্ত করেন ৫ বলে ৫ রান। সাকিব আল হাসানও শূন্য (০) রানেই ফেরেন। সৌম্য করেন ১০ বলে ১০ রান। তৌহিদ হৃদয় ৯ বলে ১৪ রান করে আশা জাগিয়েছিলেন। তবে মাহমুদুল্লাহ দলের এই চরম প্রয়োজনে নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হন। ৯ বলে ৬ রান করে রশিদ খানের বলে আউট হন। মাহমুদুল্লাহর পর রিশাদকেও সাজঘরে পাঠান রশিদ খান। এই দুটি আউটই লড়াই থেকে ছিটকে দেয় বাংলাদেশকে। বিশেষ করে মাহমুদুল্লাহই এখানে দায়ী। নুর আহমেদের একটা পুরো ওভার তিনি খেলেন। একটা বাউন্ডারি হাঁকান। বাকি পাঁচটা বলই ছিল ডট। মাহমুদুল্লাহ ও রিশাদের আউটের পরও জয়ের সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। অবশ্য সেই জয় আর টাইগারদের সেমিফাইনালে নিতে পারত না। হয়তো সুযোগ করে দিতো অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু আফগান বোলাররা বৃষ্টির পর আর মাত্র ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করে নেন। দারুণ এক জয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় আফগানরা। আফগানিস্তানজুড়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন সমর্থকরা। যে দেশে ক্রিকেট খেলার সুযোগ নেই। যাযাবরের মতো নানা দেশের নানা মাঠে ঘর পাতে আফগানরা। সেই তারাই বড় বড় দলগুলোর বাধা টপকে পৌঁছে গেল শীর্ষ চারে।

আফগানিস্তানের ইনিংসে রাহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাডরান ভালোই শুরু করেছিলেন। রাহমানুল্লাহ করেন ৫৫ বলে ৪৩ রান। ইব্রাহিম করেন ২৯ বলে ১৮ রান। শেষদিকে রশিদ খান ১০ বলে ১৯ রান করে দলের সংগ্রহ বাড়িয়ে নেন। বাংলাদেশ ওয়াইড আর বাই থেকে আফগানিস্তানকে দেয় ১৩ রান। বাংলাদেশের রিশাদ হোসেন ২৬ রানে ৩টি এবং তাসকিন ও মুস্তাফিজ ১টি করে উইকেট শিকার করেন। আফগানিস্তানের পক্ষে বোলিংয়ে দুরন্ত ছিলেন নাভিন উল হক এবং রশিদ খান। দুজনেই চারটি করে উইকেট শিকার করেন। তবে নাজমুল, সাকিব, তাসকিন ও মুস্তাফিজের উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন নাভিন।

সর্বশেষ খবর