শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আমাদের একদিন চাঁদে যেতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমাদের একদিন চাঁদে যেতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞানের মাধ্যমে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। যেন একদিন তারা চাঁদ জয় করতে পারে। আমাদের একদিন চাঁদে যেতে হবে। কাজেই আমাদের সন্তানদের শৈশব থেকেই বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা দিতে হবে।

গতকাল সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩’ তুলে দেন তিনি। এ বছর ১৮ ক্যাটাগরিতে মোট ১২৬ শিক্ষার্থী, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩’ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৫৪ শিক্ষার্থী, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী। সঞ্চালনা করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহমেদ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি আজ এটাই চাই যে আমাদের বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে উঠবে। যেখানে আমাদের স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি হবে। আজকের শিশুরা আগামী-দিনের স্মার্ট বাংলাদেশের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেবে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন একটা সুন্দর জীবন পেতে পারে সে জন্য ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের শিশুদের শিক্ষা-দীক্ষায়, সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলা সবদিক থেকেই উপযুক্ত নাগরিক হিসেবেই গড়ে তুলতে চাই। আর তা করার জন্য যা যা করণীয় অবশ্যই তা করব। শেখ হাসিনা বলেন, প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি শিশুকাল থেকেই ধীরে ধীরে তারা গড়ে উঠবে। দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে এবং দেশের উন্নয়নে তাদের চিন্তাভাবনা, তারা আরও নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তি দিয়েই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেটাই আমি চাই। আজকের শিশু আগামী-দিনের নাগরিক ও এ দেশের কর্ণধার হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ শিশুদের মধ্য দিয়েই কেউ মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী হবে, বড় বড় সংস্থায় চাকরি করবে, বৈজ্ঞানিক হবে। এমনকি এক সময় তো আমাদের চাঁদেও যেতে হবে। চাঁদও জয় করতে হবে। মহাকাশ গবেষণা এবং এ বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি। এয়ারস্পেস এবং অ্যাভিয়েশন ইউনিভার্সিটিও করেছি। অ্যারোনটিক্যাল সেন্টারও করে দিয়েছি। গবেষণা এবং সেই সঙ্গে আমাদের শিশুদের এখন থেকে সেইভাবে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষাদীক্ষায়, সংস্কৃতি চর্চায়, খেলাধুলা, সবদিকে যেন উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। সেটাই আমরা করতে চাই। তার জন্য যা যা প্রয়োজন সবকিছু আমরা করব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সব সময় আমরা একটা সুষম, জনকল্যাণমুখী, সর্বজনীন, মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা করতে চাই। আর শুধু ওই কেতাবি বই পড়ে না ছোট ছোট শিশুদের ভিতরে যে মেধা-মনন সেগুলোও তো আমাদের বের করে আনতে হবে। তাদের সুযোগ দিতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ভিতরে যে একটা কিছু করার ক্ষমতা আছে সেটা যাতে বিকশিত হয় সেই সুযোগটা সৃষ্টি করা দরকার। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কিন্তু আমরা শিক্ষা কারিকুলাম-আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানের মধ্যে নিয়ে এসে প্রত্যেক স্কুলে ইতোমধ্যে, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করে দেব। প্রথমে এটা মাধ্যমিক থেকে শুরু করেছিলাম এখন আমাদের লক্ষ্য প্রাইমারি থেকেই শুরু করে দেব। ভবিষ্যতে দুই বছরের জন্য প্রি-প্রাইমারি চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, প্রি-প্রাইমারি আমরা চালু করি। প্রি-প্রাইমারি এক বছরের জন্য, এখন আমরা সেটা দুই বছরের জন্য করতে চাচ্ছি। পড়াশোনা না, আসবে-যাবে, একসঙ্গে বসবে, বন্ধুদের নিয়ে খেলাধুলা করবে, ওই খেলাধুলার মধ্য থেকেই তাদের ভিতরে যে সুপ্ত মেধাটা আছে সেই মেধাটা কীভাবে বিকশিত করা যায়। সেই ধরনের ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। তাহলেই কিন্তু, এই ছেলেমেয়ে, এরাই তো ভবিষ্যৎ আমাদের। সেভাবে আমরা তাদেরকে তৈরি করে দিব। তিনি বলেন, আজকের যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ, কাজেই কম্পিউটার শেখা আমরা যেমন ল্যাব করে দিচ্ছি, ইনকিউবেশন সেন্টারও করে দিচ্ছি। সেইভাবে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান জনগোষ্ঠী আমরা গড়ে তুলতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। তাহলে আমাদের স্মার্ট সিটিজেন হবে। স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সমাজ। অর্থাৎ প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি। এই ছোট বেলা থেকে শিশুকাল থেকে ধীরে ধীরে তারা গড়ে উঠবে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। দেশের উন্নয়নে তাদের চিন্তাভাবনা, তারা আরও নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তি দিয়েই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেটাই আমি চাই।

সর্বশেষ খবর