শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনাল

আসিফ ইকবাল

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনাল

প্রতিশোধের ম্যাচ জিতে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত। দুই বছর আগে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে হারের প্রতিশোধ নিয়েছে। গতকাল গায়ানায় বৃষ্টিস্নাত দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ৬৮ রানের জয় পায় রোহিত বাহিনী। ২০১৪ সালের পর পুনরায় ২০ ওভারের বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত। সব মিলিয়ে ৯ আসরে তৃতীয়বার ফাইনাল খেলবে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত। শনিবার বার্বাডোজের প্রোভিডেন্সে রোহিত শর্মার প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম সেমিফাইনালে এইডেন মার্করামের দক্ষিণ আফ্রিকা ৬৭ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের আকাশসমান ব্যবধানে হারায় আফগানিস্তানকে। ২৬ বছর পর এই প্রথম আইসিসির কোনো বৈশ্বিক আসরের ফাইনাল খেলছে মার্করাম বাহিনী। ১৯৯৮ সালের প্রথম ও শেষবার দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আইসিসি নকআউট ট্রফি। ভারতের ৭ উইকেটে ১৭১ রানের জবাবে ইংল্যান্ড অলআউট হয় ১৬.৩ ওভারে ১০৩ রানে।  

গায়ানার প্রোভিডেন্সে ভারত-ইংল্যান্ড দ্বিতীয় সেমিফাইনাল বৃষ্টিতে বাধাগ্রস্ত হয় মোট ১৫৩ মিনিট। খেলা বন্ধ হয়েছে দুবার। প্রথমবার বৃষ্টিতে খেলা শুরু হয় সোয়া ঘণ্টা বা ৭৫ মিনিট পর। দ্বিতীয়বার বন্ধ ছিল ৭৮ মিনিট। আড়াই ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকলেও কার্টেল হয়নি। ২০ ওভারের খেলা হয়েছে। টস হেরে বৃষ্টিস্নাত ম্যাচে ৭ উইকেটে ১৭১ রানের বেশি করতে পারেনি প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত। ফের ব্যর্থ হয়েছেন দলটির সেরা ব্যাটার সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলি। আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে অধিনায়ক রোহিত শর্মা খেলেন ৩৯ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৫৭ রানের ইনিংস। চলতি আসরে রোহিতের এটা তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ৪১ বলে ৯২ এবং আয়ারল্যান্ড ম্যাচে ৩৭ বলে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলেন। রোহিতকে সহায়তা দেন সূর্যকুমার যাদব ও হার্দিক পান্ডিয়া। সূর্যকুমার ৪৭ রান করেন ৩৬ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায়। পান্ডিয়া ১২ বলে ২৩ রান করেন ২ ছক্কা ১ চারে। ভারত ৮ ওভারে ২ উইকেটে ৬৫ রান তোলার পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়। টার্গেট ১৭২ রান রান। ২০২২ সালে ভারতকে সেমিফাইনালে ১০ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল খেলেছিল জশ বাটলারের ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ড অবশ্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওই আসরে। ইংলিশরা এর আগে ২০১০ সালে শিরোপা জিতেছিল। ভারত চ্যাম্পিয়ন হযেছিল ২০০৭ সালে প্রথম আসরে।

শনিবার বারবাডোজে ফাইনাল। বারবাডোজে খেলার স্বপ্নে বিভোর আফগান অধিনায়ক রশিদ টস জিতে ব্যাটিং নেন। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর টারুবার ব্রায়ান চার্লস লারার উইকেটে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না, ইনিংসের প্রথম ওভারেই টের পান আফগান অধিনায়ক। মার্কো জেনসেনের নিজের প্রথম ওভারের শেষ বলে রহমানুল্লাহকে সাজঘরে ফেরান। সেই শুরু। সেই ধাক্কায় ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ৫ উইকেটে ২৮ রান তুলে কোণঠাসা হয়ে পড়ে প্রথমবার সেমিতে খেলা রশিদ বাহিনী। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি আফগানিস্তান। প্রোটিয়া পেসার মার্কো জেনসেন, কাগিসো রাবাদা, এনরিখ নর্টজে, চায়নাম্যান স্পিনার তাবরিজ শামসিদের সাঁড়াশি আক্রমণে ১১.৫ ওভারে ৫৬ রানে বিধ্বস্ত হন রশিদরা। টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের ইতিহাসে এর চেয়ে কম রানে আউট হওয়ার রেকর্ড নেই। স্কোরটি আবার আফগানিস্তানের দলগত সর্বনিম্ন। আগের সর্বনিম্ন স্কোর ৭২, বাংলাদেশের বিপক্ষে। দলটির পক্ষে সর্বোচ্চ ১০ রান করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। বাকি ১০ ক্রিকেটার মিলে রান করেন ৩৩। ম্যাচসেরা জেনসেন ১৬ রানের খরচে নেন ৩ উইকেট। টার্গেট মামুলি ৫৭ রান। বাঁ হাতি ওপেনার কুইন্টন ডি ককের উইকেট হারিয়ে ৮.৫ ওভারে স্বপ্নের সেমিফাইনাল জিতে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

 ককের উইকেটটি নেন বাঁ হাতি সুইং বোলার ফজলহক ফারুকি। আসরে এটা ফারুকির ১৭ নম্বর উইকেট। এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট। রিজা হ্যানড্রিকস অপরাজিত থাকেন ২৯ রানে এবং অধিনায়ক মার্করাম অপরাজিত থাকেন ২৩ রানে। টি-২০ ক্রিকেটে এ নিয়ে টানা আট ম্যাচ জিতে অস্ট্রেলিয়ার পাশে নাম লিখিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

সর্বশেষ খবর