শিরোনাম
রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি ছাড় দেবে না কেউ

খবর আছে সহিংসতা করলে

আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

খবর আছে সহিংসতা করলে

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি সরকার হটানোর আন্দোলন করছে। আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই-আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে খবর আছে। গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এর আয়োজন করে। তবে রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশের দিনে ক্ষমতাসীন দলের এ আলোচনা সভা সমাবেশে রূপ নেয়। বিকাল ৩টায় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুরের পরই খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে পৃথক মিছিল নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সভায় উপস্থিত হন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিএনপির কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি মানেই জাতীয়তাবাদী দুর্নীতিবাজ দল। তাদের দলের এক নম্বর নেতা তারেক রহমান দুর্নীতির দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে লন্ডনে বসে আরাম-আয়েশ করছে। বাংলাদেশের বৈধ নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপিতে তারেক রহমান এখন আতঙ্কের নাম। মধ্যরাতে টেমস নদীর পার থেকে তার ফরমান আসে। এ ফরমানে ফখরুল সাহেব, গয়েশ্বর সাহেব কোথায় যান কেউ জানে না। কর্মসূচির নাম মেড ইন লন্ডন। বাংলাদেশের জনগণ এ মেড ইন লন্ডন কমিটির কর্মসূচি মানে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পরদিন ভারতের হাইকমিশনের সামনে ফুলের মালা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। দাসত্ব মেনে নিতে তারা যে কোনো অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকেন। আমাদের সবাই বন্ধু। আমাদের কোনো প্রভু নেই। প্রভু আছে বিএনপির। তিনি বলেন, আমরা মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গাই। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা ওড়াই। আমাদের শিকড় মাটির অনেক গভীরে। আওয়ামী লীগ অস্ত্র উঁচিয়ে শেষরাতে ক্ষমতা দখরকারী দল নয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। আমরা ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে প্রস্তুত করুন। ক্ষমতার দাপট কেউ দেখাবেন না। কাউকে ক্ষমা করা হবে না। কোনো দুর্নীতিবাজকে ছাড় দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার নীতি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি কতটা কঠোর হতে পারেন তা দেখিয়ে দেবেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে দুর্নীতিবাজেরাই বেশি দুর্নীতি দুর্নীতি বলতে থাকেন। যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন তাদের মধ্যে কত যে দুর্নীতিবাজ, একটু খুঁজে দেখুন পেয়ে যাবেন। তিনি বলেন, আমি আগে থেকেই বলেছি, আমরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সারা বছর কর্মসূচি পালন করব। এখানে কেন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বলা হলো। আগস্টের পরে জেলা পর্যায়ে সমাবেশ হবে। জেলা পর্যায়ের সমাবেশে আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বক্তব্য দেবেন। সভায় মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, যত দিন আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন এ দেশের মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারবে। বিএনপির যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আদালত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলে আমাদের আপত্তি নেই। তবে আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় না বলেই আদালতে যায় না। মুক্ত করতে চাইলে রাষ্ট্রপতির কাছে যেতে হবে। আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কোনো লাভ নেই। মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি কর্মসূচি দিয়েছে তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য। বেগম খালেদা জিয়ার নামে মামলা হয়েছে ১/১১-এর সময়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছেন। বিএনপি আইনের লড়াইয়ে না গিয়ে আওয়ামী লীগের ঘাড়ে দায় চাপাতে চায়। আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দুর্নীতিবাজেরা লন্ডনে বসে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন। চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার করতে হবে। তবেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকারান্তরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন অসীম কুমার উকিল, মো. সাঈদ খোকন, নুরুল আমিন রুহুল, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন প্রমুখ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর