ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, দুর্নীতির অভিযোগে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বদলি, বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসরসহ কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থাই যথেষ্ট নয়। এসব পদক্ষেপ ক্ষেত্রবিশেষে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করে। অন্য সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইনি প্রক্রিয়ায় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদেরও বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেই তাকে বদলি করা, বরখাস্ত বা বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের মতো বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখাকেই স্বাভাবিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দুর্নীতির জন্য কার্যকর জবাবদিহি ও প্রতিরোধের সম্ভাবনার মানদণ্ডে যা একেবারেই যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী দুর্নীতি করলে দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় না- এমন ধারণা প্রসারের মাধ্যমে তা দুর্নীতিকে অধিকতর উৎসাহ দেয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংশোধনের মাধ্যমে বিদ্যমান সরকারি কর্মচারী বিধিমালা শিথিল করে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের এক ধরনের রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শুধু বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়ে দায় শেষ করা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ অনুযায়ী, সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের শাস্তি শুধু বদলি, বরখাস্ত ও অবসর প্রদানে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। যা অন্য শ্রেণি-পেশার জনগণের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের পরিচায়ক এবং সরকারি খাতের পাশাপাশি অন্যান্য খাতেও দুর্নীতির বিকাশের অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্মচারীদের বেলায়ও অন্য সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য দেশের প্রচলিত আইনি প্রক্রিয়ায় তদন্ত ও বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান।